। পুজো এলে।


পুজো এলে তোমার আনন্দ হয়না?


হয় তো।
ঝিকিমিকি রাস্তায় ঠাসবুনোট ভিড়,
কোটি টাকার প্যান্ডেল,
যশশ্বী শিল্পীর অতুলনীয় মূর্তি,
এসব দেখে আনন্দ না হবার কথা নয় তো।


তবে তোমার মুখে বিষাদ কেন পুজো আসা দিনে?


ও আমার পাগলামি।
স্মৃতির সাথে আড়ি করবো না ভাব,
সেটা বুঝে উঠতে পারিনা তো,
তাই সুখদুঃখ গুলিয়ে ফেলি।


যাহ! দুঃখ আবার সুখের সাথে গোলায় নাকি?


ভোর চারটেয় উঠে শুনতাম মহালয়া।
আধোঘুমে ‘ জাগো তুমি জাগো ‘ শুনতাম,        
যেন দেখতে পেতাম
মা দুগগা  ত্রিশূল হাতে  মহিষাসুরের দিকে ধেয়ে যাচ্ছেন,
আর কি অপার আনন্দে মন পুলকিত হতো, জানো!


এখনো তো তাই হয়..


ছাই হয়! এখন  কত বিচিত্র মহিষাসুরমর্দিনী !
চ্যানেল থেকে চ্যানেলে।
যখন তখন বীরেন ভদ্রকে বাজাও তোমরা।
সারা বছর অপেক্ষা করার মানে বোঝো?
শীতশীত ভোরবেলা গান শুনে কারো গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে?
এতটা প্রাপ্তি সুখ আজ তোমাদের,  
দুঃখরা না এসে থাকতে পারেনা।


মানলাম। দুঃখের আরো কিছু আছে কি কারণ?


সে অনেক আছে। তবে মুখ খুলে বলাটা বারণ,
পাগল ভাবতে পারে লোকে।
এগুলো একলা শুধু আমার বিষাদ,
নিজেই ভাবতে থাকি আনাপশানাপ।
খাপছাড়া ভাবুকরা পাগলই তো হয়!


কিরকম? শুনি শুনি..কাশফুল, পেঁজা মেঘ, শরত আকাশ?


ওইসব দেখবার চোখ ছোটোবেলা ফোটে না।
ওসময় কাটপিস কেনা হতো , চেনা দর্জিকে দিয়ে শার্ট আর প্যান্ট, রীতিমতো মাপ দিয়ে।
সেই সব অনন্য পোশাকেরা হারিয়ে গিয়েছে।
বাড়ি বয়ে এসে যেতো শাড়িকাকুরা।
বাইরের ঘরে পাড়ার কাকিজ্যেঠি শাড়ি বাছতেন বসে হাসি সহযোগে।
এই সহস্রব্র্যান্ড যুগে, সেই অনাবিল দরাদরি বড় মিস করি।


এক অ্যাপে কেনা যায় আস্ত দোকান, তবু মিস করো সেই সেকেলে ধরণ?


কি আর করবো বলো,
আমার দুঃখগুলো কিভাবে যে পেয়ে যায় সুখের গড়ন..


আর্যতীর্থ