। শবরী।


আগে লেখা কবিতারা কথাদের বুকে ধরে অপেক্ষা করে।
যে কলম সাজিযেছে তাকে ছন্দে অলঙ্কারে লাজুক প্রেমীর সাজে,
সে আজ অন্যত্রগামী।
ফেলে আসা পথে তার ফেরা হয় না যে।


তবুও আশা কি যায়? শব্দে বিরহ মেখে কবিতা শবরী হয়ে একা একা বাঁচে।
কলমের নানা স্মৃতি ছায়া হয় পংক্তির আনাচেকানাচে, কেটেছিলো নির্ঘুম রাত সৃষ্টির অতৃপ্ত যন্ত্রণায় কোন কথা খুঁজে,
  দপ করে শব্দের শিখা কবে জ্বলে  উঠেছিলো  মন-পিলসুজে, সেই সব মুহূর্ত জড়ো করে সাবধানে রাখে কবিতারা।
কখনো সময়-মোড়ে ফের দেখা হয়ে গেলে
আয়নায় কবি ঠিক চিনবে চেহারা।


কবি সৌখিন লোক, শব্দ জড়িয়ে হাতে ছন্দের গলি দিয়ে তার আনাগোনা।
এক কবিতার বাড়ি দুবার আসেনা,
তার যত ভালোবাসা না পাওয়া ইস্তক পড়ে উপচিয়ে ।
কবিতা যখন হেসে তার দেওয়া কথাসাজে অন্দর থেকে আসে বাইরে বেরিয়ে,
মুগ্ধ কবির চোখে তখন সে পৃথিবীর সেরা প্রেমিকা।
ছন্দের প্রতি বাঁকে জ্বলে ওঠে আশ্লেষে কামনার শিখা,
বিবশ তৃপ্ত কবি কলম নামিয়ে রেখে কবিতার চারপাশে বারবার আসে,
প্রথম প্রেমিক হয়ে এক দুই তিনদিন, ভালবাসা ভরে দেয় প্রতি নিঃশ্বাসে।


তারপর, পথ তাকে ফের টেনে নিয়ে যায় অন্য কবিতার দিকে,
পুরনো অনুপ্রাস, আদরের উপমা ও শব্দচয়ন,
নতুনের আবাহনে হয়ে আসে ফিকে।


কবিতা তখন বাঁচে পাঠকের কাছে,
কোথাও মুগ্ধতা, কোথাও তাচ্ছিল্যের তীব্র দহনে,
জীবন চলতে থাকে, কলমের স্মৃতি রেখে ছন্দগহনে।
কেউ কেউ কবির চেয়েও বেশি ভালোবাসে তাকে,
তবু সব আগে লেখা কবিতারা
কলম ফিরবে কবে সে আশায় বাতায়নে রোজ বসে থাকে।


কে জানে পথিক কবি সাড়া দেয় কিনা তার ফেরবার ডাকে..


আর্যতীর্থ