।শহীদ বেদী।


আমি রাজপথ দিয়ে তাকে খুঁজতে খুঁজতে যাই।
বহুতল বাড়ি দেখে মাটিতে তাকাই,
কোথাও কি আছে?
সব জনবসতিতে খুঁজেছি চিহ্ন তার আনাচেকানাচে,
জমাট হয়েছে কিনা  অশ্রুর ফোঁটা কারো আত্মীয় শোকে,
  স্মৃতিতে স্থাপিত কোনো বেদী বা স্মারকে
কেউ কি লিখেছে তাদের নাম?
কেউ কি কখনো বলেছে ভূমিকে, মনে রাখলাম,
লক্ষ সেগুন শাল শিমুল পলাশ বট শিশু অশ্বত্থ  হত্যার পরে,
মানুষ রেখেছে পা এইসব ঝিকিমিকি নিয়ন শহরে?
বরঞ্চ সভ্যতা আরো কিছু লাশ ফেলে হেসে ওঠে রোজ,
অনেক সবুজ খেয়ে তৃপ্ত ঢেঁকুরে চলে কংক্রীট ভোজ।


আকাশের দিকে দেখি, রেগে গেছে সে।
যত কালো মেঘ ছিলো তার বুকে ভেসে, সকলকে বলে দিলো, ঢোক সিন্দুকে,
খামোখা ভেজাতে আর বৃষ্টিকে পাঠাবোনা পৃথিবীর বুকে।


বাতাস তা শুনে হলো প্রবল গরম,
গুমরে গুমোট হয়ে চুপ একদম।
ক্রমশ ধুলোর জেরে শ্বাস নিতে কষ্টটা বাড়ে,
দূরে কোলাহল শুনি, কারা যেন বেরিয়েছে প্রগতি প্রচারে..


মাটির শুকনো মুখ, ইমারত বইছে সে কুলির মতন।
জল ক্রমে কমে কমে অরূপরতন,
নদীরা পলিতে বুজে সাগরের দিশা খুঁজে হয়রান হয়।
মানুষ অকুতোভয়,
চুয়ান্ন হাজার গাছ বলি দিয়ে পাতবে সে বুলেটের পথ,
পরে চারা পুঁতে দেবো, সমস্ত হত্যার এক বাঁধা গত।


আমি খুঁজে চলি গাছেদের শহীদস্মারক আশেপাশে।
সময় মুচকি হাসে,
বলে খুঁজতে হবেনা আর আতিপাতি অত,
ওই বহতল বাড়ি, রাজপথ, রেল আর ইমারত যত,
কটাদিন  বাদে  সব হবে জলহীন ।


অসংখ্য বেদী হয়ে তখন শুধবে ওরা সব গাছ-শহীদের ঋণ।


আর্যতীর্থ