।স্বভূক।


সব খাবে সে।
মহোল্লাসে তাবত পাহাড় ,বন ও বাদাড়,
নদীর দুপাড় ভরে যেসব সবুজ থাকে,
খুব খিদেতে মুড়িয়ে দিয়ে কচমচিয়ে সব কিছু সে খেতেই থাকে। দেখতে দেখতে গাছরা হাপিস,
থাকার বাড়ি হাজার আপিস গজিয়ে ওঠে,
উন্নয়নের বাজি ফোটে খুব আওয়াজে,
রাস্তা বিশাল, আকাশ ছোঁয়া ফ্ল্যাট কমপ্লেক্স,
গাছরা আবার কি করবে আর তাদের মাঝে?
এত খেয়েও তবুও তার পাকস্থলী ভরছে না যে..


ছড়িয়ে গেছে আতঙ্ক আজ মেঘের দলে,
বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে কারা নদীর জলে
কারখানাদের বর্জ্য ঢেলে,
বেয়াক্কেলে লাভের আশায় দেয় বুজিয়ে পুকুরগুলো,
ধনী লোকের চাল আর চুলো তৈরী হবে সেই জমিতে,
গাছের জন্য শোক করে না ইঞ্চি ও ফুট মাপার ফিতে।
বাড়ছে গরম ব্যাপক হারে,
পর্দানশীন খাট-শিয়রে চলছে এ সি, ঘাম পড়েনা ,
ঘুমিয়ে কাদা ফ্ল্যাটের লোকে,
রকম দেখে ঘাবড়ে বিষম,
জল নেই তাই মেঘের চোখে...


খুব সখ তার হবার ধনী ,
লুটবে সবার হকের ধনই সুযোগ পেলেই।
টাকা ছাড়া আর কিছু নেই জীবনে তার,
ব্যাঙ্কে যত জমছে দেদার
ততই যে তার লোভ বেড়ে যায়,
শেষ টাকাটাও পারলে নেবে বাজার থেকে প্রবল চুষে।
সঠিক হাতে বিপুল ঘুষে যাই করে সে
অন্ধসম বন্ধ থাকে চোখের পাতা রাজপেয়াদার,
গাছের হাজার শবের ওপর গজিয়ে ওঠা অট্টালিকার জবাবদিহি চায়না কেউ আর ,
পরশুরামের কুঠার যেন,
বৃক্ষ সবই ফেলবে কেটে জমির লোভে।  
মাটিই শুধু  ফুঁসতে থাকে দারুন ক্ষোভে..


এমনি করে দিন চলে যায়,
সেই রাক্ষস সব কিছু খায়,
দেখতে দেখতে উধাও গাছের জায়গা নিলো কঠিন বাড়ি, অহংকারী গম্বুজেরা চেষ্টা করে আকাশ ছুঁতে,
ভান সেরে নেয় সভ্য হবার পোষ্য গাছের চারা পুঁতে।
একদিন সে দেখলো কলে একটুও আর জল পড়ে না, কুয়োগুলো শুকিয়ে গেছে মাটির বুকে জল ধরে না।
আকাশ যেন শুখা জমি ,
মেঘের ফসল ফলায় না আর,
যেদিকে চায় ইঁট দেখা যায়,
মিলছে না জল এক আধফোঁটাও উপুর করে সব কোষাগার।
তেষ্টাতে যায় ছাতি ফেটে,
সব গিয়েছে লোভী পেটে,
গাছগাছালি, পুকুর নদী,
সবুজ বন অার পাহাড় জুড়ে গাছের সারি,
বাড়ির পরে কেবল বাড়ি এখন দেশে,


লোভ আর  খিদে বাড়তে বাড়তে তাকেই খেলো অবশেষে ..


আর্যতীর্থ