এমন হ্যাংলার হাল,
দাঁড়িয়ে কেন থাকি?
আমার নদী কীর্তনখোলা সেচে
ধানসিঁড়ি হয় যদি!
এ জনমে তোমাকে না পাই
জীবনানন্দ হই যদি!
তোমার বনলতা চোখে যদি পড়ি,
যদি জিজ্ঞেস করো,
"জানতে চেওনা কোথায় ছিলাম,
তোমার কি চাই?'"
আমার কয়জন্ম জবুথবু
বৃষ্টিভেজা দাঁড়িয়ে থাকা বেশ,
তোমাকে বলে দেয়,
কোনখানে রেখেছি আমারে,
আধপোড়া যৌবন!-
কোথায় যেন রেখেছি শৈশব,
কোথায় কৈশোর!
কোন অপলক মুখশ্রীর তোমাকে
এক দেখায় চিনেছি!
এইযে অন্ধকারেরও
আলোমাখো সৌন্দর্য আছে,
সিঁড়ির গোড়ায় মুগ্ধ অনড় থেকে জেনেছি।
আমার মতো এমন থাকেনি কেউ,
এমন বুভুক্ষা দশা আর কারো নেই!
আমার মুখে লোডশেডিংয়ের অন্ধকার,
নাকি প্রতিবেশে
সত্যিকারের সন্ধ্যা নেমেছিলো সেদিন?
তোমার ছায়া অভিভাবকের মতো
মাঝখানে দাঁড়িয়ে
আমাকে নির্বাক করেছিল সেদিন।

একদিন অবসরে এসেছিলে,
তিন মিনিটের ঘুমে।
আমার বলিরেখা স্পর্শ করে
কতগুলো বছর গুনেছো প্রতীক্ষার?
আমার মুখের দিকে তাকিয়ে
কি খুঁজেছো?-
তোমার নিঃশ্বাসে পুড়ে খাক
খাঁটি হতে পেরেছি কিনা?
আমাদের কতো কুড়ি বছরের পর
এখনো নিশ্চুপ আছি জেনে
আমাকে কি নিঃশেষ জেনেছো?

বৃক্ষও তো একপায়ে
নিশ্চল দাঁড়িয়ে থেকে
নিংড়ে দেয় ঘাম-কষ,
ডাল মেলে মেনে নেয় পাখির বসবাস,
সেও কি স্বেচ্ছায়?
এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকায়
বৃক্ষকে নির্বাক ভাবো,
বৃক্ষও তো একপায়ে
নিশ্চল দাঁড়িয়ে থেকে
নিংড়ে দেয় ঘাম-কষ,
ডাল মেলে মেনে নেয় পাখির বসবাস,
সেও কি স্বেচ্ছায়?
পালাতে চাইনি বলে
ঠিকানা লিখে গেছি পাতায় পাতায়,
একি অসহায়
পিছপা হতে না পারার ভয়!
এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকায়
বৃক্ষকে নির্বাক ভাবো,
এর মানে কি সায়?

নিছক ঘুমের পর
জেগে দেখি
আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছো,
কি খুঁজতে কি পেয়েছো?
আমিতো  তিন মিনিটের অবসরে
তোমার বুকে আমার মুখের ছাপ এঁকেছি,
ঘামের গন্ধ শিশি পুরে রেখে দিয়েছি
দাদার সাথে যুদ্ধ জেতা জুতোর বাক্সে,
ঘুড্ডি-লাটাই-লাটিমের পাশে!
তিন মিনিটের ঘুমের শেষে
চোখ ছলছল সন্ধ্যাবেলা,
শিশুর আঁকা অভিলাষ,
নির্দোষ অভিমান!

সন্ধ্যা এসে বলে,
"ফুরিয়ে যাওনি,
সকল চাওয়া কেবল
লাফিয়ে-লতিয়ে বেড়ে উঠেছে!"
এই ক্রমবর্ধমান সন্ধ্যার আঁধার
বারবার অসফল করে,
আমাকে নিমেষে নিঃশেষ করেছো,
খালি করেছো-
মহাখালী টিএন্ডটি কলোনির
অন্ধকার সিঁড়ির গোড়ায়!
সেই থেকে শুরু
এবং তারপর,
তোমার জোৎস্না ঠেকাতে
তোমার আজ্ঞাবহ পাহারা জোনাকির!