কেটে গেছে কতকাল, কত শত ক্ষণ,
ঘন শীতে বহমান বায়ুর মতন।
  শেষ মাঘে অনুরাগে কেঁপেছিল হাত,
  পাষণ্ড হিমবাহে ক্ষিপ্ত প্রভাত।
    শেষ সাক্ষাতে ভয়ে মিশেছিল ক্রোধ,
    প্রিয়তমা শোকে বুকে বাড়ে অবরোধ।
বিষাক্ত হত ক্ষত গিলেছিল ঘাড়,
অতঃপর খোঁজ পাওয়া যায়নি তোমার।
  কী বিষাদে অবসাদে ভুল কারাবাস?
  নিমগ্ন আক্রোশে মরে ক্রীতদাস।
    যেমতি জননী কাঁদে পুত্রশোকে হায়,
    সেভাবে বিবেক যেন নিয়েছে বিদায়।
বিষাক্ত চাহনিতে জ্বলজ্বল চোখ,
বিলাসী বাসনা মরে হেরি শত রোগ।
   চিনিতে পারি না আমি আপনারে আজ,
   স্নায়ুকোষে অবকাশে হাসে নব সাজ।
     এখনো কি অবিরত হেসে উঠো তুমি?
     হৃদয়ের মাঝে গড়ে আর্দ্র বধ্যভূমি।
ঘাতক বেঁধেছে বাসা ললাটের ভাজে,
নব আশা খুন করে রোজ নব সাজে।
  সুমতির দেখা নাহি মেলে পরিতাপে,
  আসুরিক অমানিশা হেসে উঠে পাপে।
    কতবার ভেবেছিনু ছিঁড়ে ফেলি সব,
    যেভাবে গর্ভপাতে মরে কলরব।
তবু যেন সবেতেই জট লেগে যায়,
অবোধের মত চুল ছিঁড়ি অবেলায়।


যেভাবে হাসনাহেনা হাসে রজনীতে,
আমারও ইচ্ছা করে বাঁচি প্রতিদিন
সেভাবেই আহ্লাদে ঈর্ষাবিহীন
হয়ে বিষাক্ত কর্দমাক্ত মৃত পৃথিবীতে।
যেভাবে শিশুরা কাঁদে মাতৃ স্নেহে ক্রোড়ে,
সেভাবে কাঁদিনি আমি কত শত দিন।
কতবার আক্রোশে হয়েছি বিলীন
এই মিথ্যের ভ্রমে ঘেরা সময়ের তরে।
আজ নারকীয় শোকে বুকে জেগেছে মাতম,
কাঁদবার নেই কেউ, কাঁদব যে আমি
আত্ম জিঘাংসায় অক্ষত ক্রোধ
হয়ে যাক ধ্বংসের হত অনুগামী।
হেসে উঠে কল্প পটে রুক্ষ বধ্যভূমি,
হেসে উঠে সেই মাঘে দেখা সে প্রথম
জড়োসড়ো ছানাবড়া নয়নেতে তুমি।


ফিরিবার পথ নাহি তবু যে তাকাই,
ঘাতক হাসছে তবু কাঁদে অবেলায়।