আত্মকথন ২
মোঃ সালেহ উদ্দিন প্রামানিক (উত্তরের পথিক)


##
সমাজ ও পরিবার
আমার মুখে গুজে দিয়েছিলো
জাতীয়তাবাদের নামে
কিছু কিছু দূষিত কথামালা
সবসময় পরিবার আমাকে
বাধ্য করেছিল সবার মতো
হিংসা হিংসা করে বাঁচতে
যদিও আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।।


##
সবসময় আমি আমার
নিজস্ব ভঙ্গিতে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম,
সবসময়ই আমি পোশাক পরতে চেয়েছিলাম
একান্ত আপন রীতিতে,
আমি চুল আঁচড়াতে চেয়েছিলাম
নিজের রীতিতে,
আমি উচ্চারন করতে চেয়েছিলাম
চিরন্তন মৌলিক মাতৃভাষা।।


##
সবসময় আমি নিতে চেয়েছিলাম নিজের নিঃশ্বাসে
আমি আহার করতে চেয়েছিলাম
আমার একান্ত মৌলিক খাদ্য,
আমি পান করতে চেয়েছিলাম
আমার মৌলিক পানীয়।।


কেন জানি এমন মনে হয়,
আমি ভুল সময়ে জন্মেছিলাম
আমার সময় তখনো আসে নি
আমি ভুল বৃক্ষে ফুটেছিলাম
আমার বৃক্ষ তখনো অঙ্কুরিত হয় নি
বাকীটা আল্লাহ মালুম।


##
সবসময় আমি ভুল নদীতে
স্রোত হয়ে বয়েছিলাম
আশা ও ভালোবাসার মেঘ
তখনো আমার আকাশে জমে নি
তবুও আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।।


##
সবসময় আমি গান গাইতে চেয়েছিলাম
আপন সুরে,
ওরা আমার কন্ঠে পুরে দিতে চেয়েছিলো
ওদের নষ্ট হওয়া প্যানপেনে সুর।


##
সবসময়ই আমি
আমার মতো স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিলাম,
সবাই আমাকে বাধ্য করেছিলো
তাদের মতো
হিংসা ও কাপুরুষের মত স্বপ্ন দেখতে।।


##
সবসময়ই আমি
আমার মতো দাঁড়াতে চেয়েছিলাম,
কিন্তু সমাজ, রাষ্ট্র ও পরিবার
আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলো
তাদের মতো কাপুরুষের মতো
মাথা নিচু করে দাঁড়াতে।


##
সবসময়ই আমি
আমার মতো কথা বলতে চেয়েছিলাম,
আজেবাজে আড্ডার লোকেরা
জোর করে
আমার মুখে
ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিলো
তাদের নষ্ট হওয়া
কিছু কিছু শব্দ ও বাক্যের আবর্জনা।


##
আমি  আললাহর রহমত নিয়ে
নানা রঙের বিপ্লব দিয়ে  
সমাজ বদলাতে চেয়েছিলাম,
সমাজ তো আর যায় কোথায়!!
তখন শুরু হল সমালোচনা
অকারনে হয়রানি ও আগ্রাসনের নগ্নতা
আমি ওমুক তমুক নানা তকমা ও উপাধি পেলুম।।


##
আজও আমাকে
তাদের মতো করেই
দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছিলো বাইরে
সবসময়ই তারা মুখে
কেন জানি
এক টুকরো পঁচা মাংস পাওয়াকে বলতো সাফল্য।।


##
আজও সমাজ ও পরিবার
নানা অপ উৎসবে উৎসবে
বার বার সালাম ও নতজানু হওয়াকে
ভাবত গৌরব
কেন জানি
আমার ভীষণ অবাক লাগে।।