মুক্তির ডাক
মোঃ সোহাগ প্রামানিক (উত্তরের পথিক)


১) এসেছি এ ধরায়
মুক্তির তরে,
মুক্তির ডাক চারিদিকে।
পাখি ডাকে সবসময়
তুমি কি শুনতে পাও বন্ধু?
সত্যি সকালও ডাকে,
সত্যি বিকালও ডাকে,
সনধ্যা,গভীর রাতও
ডাকে সবাইকে
সত্যি আমরা বধির।।
নদী-সাগর, খাল-বিল
সবুজ গাছপালা
বন,পাহাড়
সবাই ডাকে
কেন বন্ধুরা জানো??
একমাত্র মহান মালিকের
শুকুর গুজুরের নিমিত্তে
মহান আললাহর দরবারে
সেজদায় অবনত হতে বারে বারে।।


২)
যখন গভীর রাত,
পন পন নিরবতা,
তোমার কাজের জায়গা বা
নিজ বাড়ি থেকে
যেই না রাস্তা পেরুতে
পা বাড়াও —
সামনে পড়ে কবরস্থান।।
তুমি  কি শোনো?
তোমার অন্তরের
অচিনপুর থেকে
কে যেন তোমাকে ডাকে??
তোমার সামনের,
উন্মুখ কবরখানার দিকে চাইলেই,
বুঝতে পার।।


৩)
ভয় নিয়ে নয়
কবরবাসিরা বলে,
বন্ধুগণ আমাদের মধ্যে
কোন ফাঁক নেই-
আমরা একসঙ্গেই আছি!
শুধু জগৎ আলাদা
তোমরা যে মানব নিধি —
সবাই  তার অন্তহীন সজ্ঞা
তোমরা বার বার
বিষাদের মর্মমূলে
আমরা আনন্দ উৎসারে।


৪)
রাতের কথা ভেবে দেখো —
সাপে কাটার ভয়ে,
মানব অত্যাচারের ভয়ে,
শান্তিময় ঘুমের তরে
নিজেকে নিরাপদ রাখো।।
কিন্তু রাত তোমায়
কিছু বলতে চায়,
এই রাত শুধু,
মহান মালিকের,
তরে ইবাদতে।
আসল কাজে
মানবরা সত্যি,
ফাঁকিবাজিতে ওস্তাদ।।


৫)
এসেছি এ ধরায়
মুক্তির তরে,
মুক্তির ডাক চারিদিকে।
আমরা পালিয়ে বেড়ায়
সঠিক পথের নিশানার অভাবে
দেখো, বুঝো
কবরস্থানে কি যেন মমবানী ভেসে আসে,
তারা বলে শুধু
আমি ডাকছি তোমায়
শুনতে পাও
আমার চিরচেনা গলা,
কখনও ধুপবাতির ঘ্রাণ
কখনও নীরবে মৌমৌ;
দুনিয়ার খাবারের আয়োজন দেখে
তোমরা রীতিমতো হতবাক হও!
দুনিয়ায় একজনের ভালোবাসা
কতো প্রাণের অন্তরালে
ফল্গুধারায় জাগে।


৬)
কবরবাসিরা আরও বলে
শুধু শুনে যাও
আমলের নিমিত্তে বন্ধুগণ
তারা আবার বলে,
জানি আমার তারস্বরে
তোমাদের অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে,
আমি এভাবেই চেঁচাই —  
তুমি যেন কবরে মাতমে জ্বলে ওঠো।
কাফনের কাপড় নিয়ে অনুযোগ করো না,
গোরস্তানের পথ থাক না ধুলামলিন,
তাতে কী!
শবদেহে মোড়ানো
কাপড় ছেঁড়া হয় গেরোদেয়া কোণায়।
আখেরাতে দীর্ণ মানুষের স্বনন ধুয়ে দেয়,
মৃতদের  শ্রান্তি ও ঘাম!


৭)
মাঝে মাঝে কবর জিয়ারত কর
মনে শান্তি আসবে
আমার ঠিকানাও এখানে হবে
মহান মালিকের ভালোবাসায়
মূল মাকসাদ হওয়া উচিত।
কবরবাসিরা আরও বলে
শোন বন্ধুগন,
তারা বলে,
আমাকে খোঁজো না
মানুষের দেহ-খাঁচায়
ভালোবাসার তীব্র ঝড়
আমাকে ভেঙে একাকার করে দিয়েছে
দুনিয়ার আকার, ক্ষেত্রফল ও মালিকানায়।
বাজাও ডঙ্কা,
কবিকে আমন্ত্রণ —
বলুক মহান আললাহর পদাবলী কালাম।
সুদিন এসেছে
সেদিনের কাছে —
যেদিন তোমরা পরিশুদ্ধ হবে।।


৮)
হতে পারো আমরা মানবরা
যা পেয়েছি বোধের মখমল,
যারা প্রেমের আঙিনায়
আসবে বলে নিয়ত করেছো।
আমাদের মৃত্যুর কিনারা
অবধি অপেক্ষা করতে  হবেই
জগতে বহুকিছু আছে
যা টাকার চেয়ে দামী,
কেবল বিখ্যাত হয়ে ওঠার
কী-বা মূল্য আছে বলো।।


৯)
অনেক কবি তো বিখ্যাত
আখিরাত এই বিখ্যাতের
কোন ফায়দা নাই
দুনিয়ার কাচ্চিবিরিয়ানি বা খ্যাতি-যশ
এমন কিছু নয়
যার জন্য  তোমরা লালায়িত হও!
আললাহর প্রেমের প্রেমিক হও
নবী (সাঃ) এর প্রেমের প্রেমিক হও
জীবন ইসলামের তরে
আপন মওলারে
ডাক তারে —
ভালোবাসার
আশেক নগর গড়ে তুলো
ওঠাও, আললাহর মহব্বতের
নতুন নতুন প্রেমের দালান বাড়ি —
কেন এখনও মানুষেরা বসে নিঃশব্দে
দেখছ না তোমরা
চোখ ডোবে সহজ দৃশ্য প্রভার কারণ।।
মহাকাল, মহাবিশ্ব
সবাই দিচ্ছে ডাক
চারিদিকে মুক্তির ডাক
আমরা এখনও ঘুমিয়ে
সময় আগুয়ান
হাতে নেও পাক কুরআন
নবীর হাদিস নিয়ে
মুক্ত হবে
আললাহর আহবানে।।
আরও কোন প্রশ্ন নেই,
মুক্ত হবো মোরা
উত্তরে হাওয়ায়
মেশে প্রাণের শনশন
বল বল আমিন আমিন।।