হারিয়ে গেছে সব,কালে কালে হারিয়ে গেছে সব।
কিছুই যেন আর নেই, ঠিক আগের মত সেই।
বসত বাড়ি গুলি কেমন দূরে দূরে সরে গেছে।
আমতলায় বসবার সেই বেঞ্চিটুকুও আর নেই।
মানুষ কেমন সাহসী হয়ে উঠেছে আগের তুলনায়,
একা বাস করতেও ভয় পায় না আর।
সেই ঘনবসতি, জোছনা রাতে পুথির আসর,
হারিয়ে গেছে সব, কালে কালে হারিয়ে গেছে সব।
এবাড়ি ওবাড়ি ঝগড়া বাধে না আর,
অশরীরিণী রাতের আঁধারে ভয় দেখাতেও ভুলে
গেছে।
সন্ধ্যে বেলায় কুলারভিটায় কারো ঘাড় মটকিয়েছে
পেত্নীটা,
এমন খবরও ত্রাস সৃষ্টি করে না আর।
যে তাল গাছটায় পেত্নীরাণী বাস করত,
সে তাল গাছটায় আর তাল ধরে না,ধরে জটা,
পেত্নীরাণী তার চিহ্ন রেখে হারিয়ে গেছে ৪৩
বছর আগে।
হারিয়ে গেছে সব, কালে কালে হারিয়ে গেছে সব।
বাহারি ডিঙিতে করে বেদেরা দল বেধে আসে না
আর।
সাপে-নেউলের যুদ্ধ বাধিয়ে মুষ্ঠিচাল নেয় না ওরা
এখন।
জল ছড়ে ডাঙায় বেদেদের বাস, বেধেছে সৌখিন
ঘর।
ধান কাটা সারা হলে, গরুর পাল দিয়ে মাড়াই করে
না আর।
কত রকমের মাড়াই কল, ট্রাক্টরের যুগ এখন,
গরু গুলি এখন হাল চষার দায় থেকে মুক্তি পেয়েছে।
শুধু একটু দুধ দিলেই হল!!!
সেই গরুর গাড়িও আর নেই,
পিচের রাস্তায় গরুর গাড়ি বড্ড বেমামান!!
যেখানে সাঁকো থাকার কথা ছিল,
সেখানে আজ লোহার ব্রিজ।
পিচে ঢেকে দিয়েছে পায়ে হাটার রাস্তা,
সভ্য মানুষ পায়ে হাটা ভুলে গেছে সেই কবে।
হারিয়ে গেছে সব, কালে কালে হারিয়ে গেছে সব।
কিছুই যেন আর নেই, ঠিক আগের মত সেই!!!


                                       ১২/০৫/২০১৫