স্নিগ্ধ-কোমল-বিষন্ন বিকেল - আলো আঁধারের মেলা
ক্লান্ত বদনে, বিষাদ মনে পথে বসিলেম একেলা।
ক্লান্ত মুখ আরো হেঁটে যায় শত - আমি রাস্তার ধারে বসে!
কত কষ্টের ঘৃণ্য আঘাতে মোর জীবন পড়েছে ধসে।
পথ যে আরো দিতে হবে পাড়ি উঠাইতে হবে পা।
কত কাটা আরো দিতে হবে মাড়ি - বিধাতাও জানে না।
আরো কত ধ্যান আসে মনে, শত কষ্ট জমে ফাঁকে!
- কাঁধে কার হাত? করুণ গলায় কে যেন আমায় ডাকে!
দেখি তাকায়ে, চোখ বাকায়ে - ছোট্ট একটি মেয়ে
বিবর্ণ মুখ, খুসকো চুল, নোংরা জামা পরনে।
মুচকি হাসি - ফুলভরা হাত সামনে বাড়ায়ে!
বকুল বেলি জড়ায়ে ছোট মূর্তি - দাঁড়ায়ে।
- ফুল নিবেন, ফুল? তাকায় অপলকে দুই আঁখি।
নিষ্পাপ চোখ, যেন বিধাতা ধরার কষ্ট রাখিছে ঢাকি।
কিন্তু এই ফুলের সুরভী মোরে নাহি আর বশে
জীবনের সব সুখ আহ্লাদ পূর্বেই গেছে খসে।
অকর্মা এই পোড়ামুখোর হাতে ফুলের কিই বা কাজ?
তাকায়ে নিম্নে - বিধাতা কি এর জবাব দিবেন আজ?
পলক পরে না কেশবতীর, সে তাকাইয়া মোর পানে।
ক্ষুব্ধ বিধির কঠোর লীলা সে কভু না জানে।
আমিও যে তোর মত একা, সঙ্গ পাই না কারো।
ফুলের সুরভি, কোমল পাপড়ি দেবে দুঃখ - আবারো।
বিতাড়িত এক পথিক আমি, কারে দিব এই ফুল?
হতাশাভরা মনে আজ এই পুষ্প চক্ষুশূল।
কত ফুল যে পথে পরে রয়, থাকে পায়ের নিচে।
সেই ফুলে আবেগ জড়ায়ে কান্না করাও মিছে।
পাষাণ কঠিন এই মনে আজ ফুলের জায়গা নাই।
ক্লান্ত বদনে শুধু আজ এই পথের শেষ চাই।
ভাবিতে ভাবিতে গড়ায় বেলা, আধারের কথা বলে।
হতাশ মনে চাহি সমুখে - সেই মেয়েটি গিয়াছে চলে!


রাখিয়া গিয়াছে ফুল।
এই পাষাণের তরে কেউ করিবে না এই ভুল।
এই কূল হীন বালকেরে কেউ পুষ্প করিবে দান?
স্নিগ্ধ করিবে হৃদয় মোর, আশায় দানিবে শান!
ফুল লইয়া বসি পাশে।
ভগ্ন মন আর অসার দেহে স্বস্তির হাসি আসে।
গড়াতে গড়াতে আধার হাসে, শক্তি আসে মনে।
হাতে নিয়া ফুল বিদীর্ণ পথ - পারি দিব এক্ষণে।