নীরব রাতের আকাশেরা অক্ষত।
সাদা তুলো মেঘ ভেসে ভেসে যায় যত,
উড়ে যায় সব অবাক স্মৃতির মত।।
একা কালো চোখ জাগে শুন্য পানে,
দখিনা হিমের মধুরিমা বায়ু স্নানে।
বিতাড়িত মেঘে সুরেরা হয়েছে জব্দ।
আজ চারিপাশ জুড়ে হাহাকার নিস্তব্ধ।
আঁধার গড়িয়ে তল্লাটে জমে ধুলো।
সুরহীনা থাকে যত গানের পঙক্তিগুলো।


জোছনা তুমি নির্বাকের গান শোন?
তোমার আকাশে সুরের ঐকতান।
শুভ্রসুরে গান ধরে শুকতারা।
মাটির শ্রোতারা বেখেয়ালে হয়রান।


একা চাঁদমুখ মেঘ ডিঙ্গিয়ে বাঁচে।
দীপ্তি ছড়ায় স্বর্গলোকের কাছে।
এই চাঁদছায়ায় বেহুলাও একা নাচে।।
আর মাধুরী বাতাস চরণের তাল ধরে।
একা পাতারাও দোলে ক্লান্ত স্বরে।
নিঃশেষ প্রাণে পাতাঝড়া গাছ হাসে।
নিশীথ পরশে সবুজ- আজ ফ্যাকাসে।


জোছনা তুমি নিঃসঙ্গের সাথী হবে?
আকাশ তোমার তারার মিছিলে ক্লান্ত।
ধরণীর কোলে একাকীত্বের জয়গান।
মাটির চোখেরা রাতজুড়ে উদ্ভ্রান্ত।


আলো ফোয়ারায় গানগুলো যায় শোনা।
তারা আকাশের জলরঙে আঁকা কণা,
ছোঁয় দূরবীন চোখের নাগরিক জল্পনা।।
তাতে ভারী হয়ে ওঠে সুরহীন গানের শব্দ।
মেঘের সাথে সব আভায় হারিয়ে যায়।
স্মৃতি বিস্মৃতির বিভোরে সময় জব্দ।
আজ বিনাসুদে তারা ধারের আলোয় গায়।


জোছনা তোমার কিসের এত দীপ্তি?
চোখ ধরে কেন তোমার আকাশ দেখে?
মাটির প্রজার শহরে আজ সব নিষ্প্রাণ।
তবু তোমা পানে চায়- দুঃস্বপ্নের ঘুম রেখে।


আড়াল দুখের অবয়ব মেঘ ভাসে।
সুর ঝরে যায় হাহাকার প্রশ্বাসে।
হিম কুয়াশারা গান ধরে মজলিশে।।
বায়ু ছুঁয়ে যায় মৃত শহরের প্রান্ত।
দ্যু-আভায় একা শত চোখ ছলছলে।
শব্দখোঁজে হাতড়ে ফিরে সে ক্লান্ত।
এই জোছনা আসে, জোছনাও যাবে চলে।


জোছনা তুমি সুর দাও তল্লাটে।
দূর করে দাও একাকীত্বের সত্ত্বা।
ছড়ে যাক তারা মাটির শ্মশান ঘাটে।
আজ গানে ভরে যাক নির্বাক সব আত্মা।