ঝরা কদম
       ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


বর্ষা এলো, চলো আরো একবার শৈশবে ফিরে যাই।
সদ্যোজাত নদীর বুকে কাগজের নৌকা ভাসিয়ে
এসো খেলা করি।
আজ আর স্কুলে যাওয়া নেই,নেই কোন কর্ম ব্যস্ততা।
বারান্দায় বসে অঝরে ঝরে পড়া বৃষ্টির ফোটা গুনি,
আর হাত বাড়িয়ে স্পর্শ অনুভবে এসো সিক্ত হই।


দিগন্তের যে সুনীল আকাশ নিবিড় মেঘে মুখ ঢেকে
কৃষ্ণকলি সেজে তাকিয়ে থাকে,
আর হাতছানিতে ডেকে যাওয়া রাখাল বালকের
প্রেমের দৃশ্য-
আজ আরো একবার আঁকতে বসি এসো ক্যানভাসে
রং তুলিতে।
অথবা, উঠানের বুকে জল স্রোতে ভেসে যাওয়া
রঙিন শুকনো পাতার আঁকাবাঁকা লম্বা সারির
সেই বিচিত্র দৃশ্য।


হে-বন্ধু, তুমি কি যাবে আজ কদম বনে?
চঞ্চলা উতলা মনে শাওন দুপুরে কাঁদা রাস্তায়,
চলো আরো একবার হেঁটে যাই দুজনে হাতটি ধরে।
যদি পা পিছলে পড়ে যাই, অভিমানে কেঁদে যাবো-
যতক্ষণ না তুমিও পড়বে।
তারপর একসাথে কাদা মাখামাখি, বৃষ্টিতে ভেজা,
বেলা গড়িয়ে বাড়ি ফেরা, অবশেষে শুনবো মায়ের বকুনি।


জানি, কোনদিন পিছু ফিরে আর হবে না দেখা,
শৈশব এখন কেবলি ছিঁড়ে ফেলা স্মৃতির পাতা।
সেই শ্রাবণ আসে, গগনে মেঘ ভাসে, বিজলী জ্বলে,
কাননে কদম ফোটে, জল গড়িয়ে সদ্যোজাত নদী হয়,
তবু সময়ের অন্তিমে হারিয়ে যায় শৈশব,
ঝরে পড়ে কদম, হারিয়ে যায় বন্ধু,
শুধু ভালোবাসা বেঁচে থাকবে স্মৃতির আঙিনায়
জীবনের অন্তিম মুহূর্ত অবধি।



✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল ১৮ জুন ২০২০ সাল,
বাংলা- ৪ আষাঢ় ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।