মায়ের আশীর্বাদ চাই
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


কর্ম এবং কর্তব্য জ্ঞান উপেক্ষা করে, আত্মতৃপ্তির সন্ধানে
সন্ন্যাসী বেসে ছুটে গিয়েছি অনন্ত যাত্রাপথে।
কিন্তু আজ যখন চেতনা বিকাশিত হলো,
হয়েছি লজ্জিত-মর্মাহত।
ওগো-জননী! ভুল করেছি, ক্ষমা করো-
আমি অপরাধী।


বিশ্বাস করো -- পলায়ন আমি করিনি,
করেছিলাম মোক্ষলাভের পথ অনুসরণ।
আজ যখন জেনে গিয়েছি জীবন আমার ধন্য হবে
তোমার সেবায়-আত্মদানে,
তখন ফিরে এসেছি নত মস্তকে তোমার চরণে ঠাই পেতে।


অজ্ঞানতা অন্তরের দুর্বলতা হয়, জ্ঞান প্রভাত আনে।
কিন্তু শক্তি সে তো তোমার দেওয়া প্রদত্ত দান।
বিফল হতে পারে না জীবন, সৃষ্টির গতি করবো সঞ্চালন,
কর্ম ও কর্তব্য জ্ঞানে জীবন দিয়ে তোমারে করবো সেবা  
আজীবন।


হে-জননী আপন করো,ঠাই দাও চরণে।
আত্মজ্ঞানে ফিরে এসেছি, অন্তরে তোমারে রেখেছি,
একবার আঁখি খোলো অশ্রু মুছে ফেলো,
দেখো হতভাগ্য আমি তোমার সেই অধম সন্তান
এসেছি মায়ের আশীর্বাদ প্রাপ্তির আশায়।  


বলতে পারো-কত মূর্খ হলে তোমায় যায় না চেনা?
আর কত জ্ঞান ধারণ করলে বলা যায়,
মা ঈশ্বরের থেকে শ্রেষ্ঠ।
হে-জননী তোমারে ভক্তি শ্রদ্ধা ভরে
অঞ্জলি দানে আজ থেকে করবো পূজা,
অনেক যাতনা সয়েছ বলিদান দিয়েছ কংসকারাগারে।


চতুর্দিক রেখেছে শত্রু পাহারায়, ক্ষতবিক্ষত করেছে দেহ,
সদ্যোজাত শিশুকে করেছে হত্যা,
এখন তোমার বুকে শুধু শ্মশানের দহন জ্বলছে,
রুক্ষ হয়ে গেছো তুমি,  শত্রুর অন্যায়- অত্যাচার- নৃশংস
হত্যায় রক্ত স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে তোমার বুকে।


আজ নয়নের দৃষ্টি থমকে গেছে, চারিদিকে অন্ধকার --
হাহাকার ধ্বনিতে সহসা হৃদয় কম্পিত।
শত সহস্র বছর সূর্য উদিত হয় না তোমার বুকে,
ফুল ফোটে না, পাখি গান করে না, বাতাসে সুগন্ধ নেই,
আছে আর্তনাদ, বারুদ ও  লাশ পচা গন্ধ।


কঠিন থেকে কঠিন নির্যাতন ভোগ করে চলেছ তুমি।
স্বাধীনতা নেই,খাদ্য নেই,বাঁচার ইচ্ছা নেই,
নেই আজ সমাজ সংস্কার।
শুধু হিংসা বিদ্বেষ অহংকারে ছেয়ে গেছে গোটা আকাশ।


এমন ক্ষণে তোমায় ছেড়ে যদি থাকি,
কি করে জীবন পূর্ণ হবে?
হয়তো তুমিও আমার অপেক্ষায় ছিলে,
তাই আজ দুঃখ নয়, নয় ভয়, এবার নিভবে শ্মশান!
হে-জননী, হয়ে এসেছি আমি তোমার  বীর সন্তান।


✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল ১৯ নভেম্বর ২০২০ সাল,
বাংলা ৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।