অভ্যাস নয় জ্ঞানেই আত্মতৃপ্তি
   ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


             ‘‘কথায় বলে মানুষ অভ্যাসের দাস
                    এটা সত্য,না কি মিথ্যা?
                    জানার জন্য করি প্রয়াস।’’


আমরা দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু করি,
বা যা কিছু করতে হয়,
বারবার একই কার্য করার ফলে একটা অভ্যাস গড়ে ওঠে।
আর অভ্যাস থেকে ভালোলাগা সৃষ্টি হয়,
ভালোলাগা থেকে বিশ্বাস জন্ম নেয় মানুষের মনে।
তখন সেই ভালোলাগা অভ্যাস কে কেন্দ্র করে
আমরা জীবন পরিচালনা করি।


কিন্তু সর্বক্ষেত্রে সবকিছু যেমন শুভদায়ক বা সুখকর হয় না,
তেমনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভ্যাস-ও জীবনকে দুর্বিষহ করে তলে।
এর জন্য দায়ী আমরা প্রত্যেকে, কেননা ভালমন্দের বিচার
না করে অন্তরে কোনকিছু কে আপন করে সুখ খোঁজার
মূর্খতার ফল কোনদিন ভাল হয় না।


তবে কি অভ্যাস থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে?
কিন্তু তা কি সম্ভব? জীবের ভাল-মন্দ, সুখ-দুঃখ,
মিলন-বিচ্ছেদ, আশা- অপ্রত্যাশা,
এমনকি মনের কল্পনায় মিশে গড়ে ওঠে অভ্যাস।
যেমন প্রেমিক-প্রেমিকা হলে একে অপরের প্রতি মধুময়
ভাবনা-কল্পনা  বা বাস্তবতায় কাছে চায় মন প্রতিক্ষণে,
এটা তাদের ভালোলাগা এবং অভ্যাস।


স্বামীর শক্তি স্ত্রী হয়, এবং স্বামীর জীবন ও সংসার গুছিয়ে
রাখে স্ত্রী, দুজন-দুজনের প্রতি সমর্পণ, সেবা, শ্রদ্ধাকরা এটা
তাদের ভালোলাগা এবং অভ্যাস।
অভ্যাস কেবল জীবনের সাথে জড়িয়ে নয়,
প্রেমের প্রকাশকও বটে।


তাই বলে কেউ যদি রাগান্বিত হয়ে ঝগড়া করে সুখ এবং
মন ভালো করার অভ্যাস তৈরি করে,
তবে কি তাকে প্রতিনিয়ত ঝগড়াই করতে হবে?
রাগ- অনুরাগ জীবনের সঙ্গী, আর মনের তৃপ্ততা মানুষের
অভ্যাসের সাথে জড়িয়ে  থাকে।


যদি কেউ বিরহের দহনে দগ্ধ হয়ে একটু শান্তির জন্য
মদ্যপানের অভ্যাস তৈরি করে,
তবে তাকে-ও কি সবসময় মদ্যপান করতেই হবে?
কেননা মিলন বিচ্ছেদ বিরহ জীবনে বারবার আসে,
আর সে মদ্যপানে সুখ খুঁজে পেয়েছে।


তাই আমাদের সবসময় জীবনে জ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে
পথ চলতে হবে।
ভালো মন্দের সঠিক  বিচার করতে হবে।
আমরা যেমন খাদ্যের মাঝে ভালোটুকু খেয়ে
উচ্ছিষ্ট ফেলে দেই, তেমনি ভালোর অভ্যাস গড়তে হবে।
সুখ-দুঃখ সবকিছু কেবল কল্পনা মাত্র,
কেবল অনুভবের বিষয়।
তাই সবকিছুকে প্রতিহত করতে শিখতে হবে!
জীবন নিজের,নিজেকে শুধুমাত্র সুখের জন্য
ধ্বংস করা উচিত নয়।



✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ সাল,
বাংলা ১০ পৌষ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, শনিবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।