তুমি এসো বারো মাসে
তুমি এসো বৈশাখে বাংলার ঐতিহ্যের আমন্ত্রনে
ইলিশ পান্তায় মন ছুটে যায় তোমার আসার জয়গানে
আকাশচারী রং বেরংয়ের ঘুড়ি ছোটে অই দুর পানে
প্রানে দোলা মনে জালা হবে দেখা তোমার সনে।
তুমি এসো জৈষ্ঠের পাকা ফল ফলাদির ঘ্রানে
মৌ মৌ গন্ধে পিপাসার্ত হয়ে তোমায় দেখিতে চাই এপ্রাণে
মধু মাছিদের মত কও কথা এসে মোর কানে কানে
আশায় হৃদয়ে বাধি ঘর -আসবে ফিরে যদিও মন জানে।
তুমি এসো আষাঢ়ের কোন দ্বিপ্রহর বেলায়
যখন আকাশে মেঘ গুরগুরে এমন হারায়
মন উড়ে যায় আকাশ পানে ঝড় হাওয়ায়
এমনদিনে ঢেউ খেলে যায় প্রেমেরও খেলায়,
তুমি এসো শ্রাবনের ধারা হয়ে ঝরঝর বর্ষায়
জলস্রোতে করবো আলিংগন মন মোহনায়
মনের সংগোপনে অপলোকে দেখব তোমায়
খুজে পেতে রাখবো চোখ হৃদয়ের জানালায়,
তুমি এসো ভাদ্রের তালপাকা দাবদাহে পরন্ত বেলায়
খুজে ফিরে অবশেষে ঘামে ভিজে বসো হে বটছায়ায়
ডাকে পথিক কেহে ঘুমোয় স্বপ্নে বাধা বাসায়
হৃদয়ের গোপন কুঠুরিতে করো বাস প্রেমের নির্মগ্নতায়।
তুমি এসো আশ্বিনের শীনশীন শীতের আমেজে
জড়ায়ে গায়ে উষ্ম কল্পনা ভিন্ন এক সাজে
দেখতে তোমায় অপরুপা লাগে বহুদের মাঝে
দেখি তাই সাজের মায়ায় আপন কোন কাজে
তুমি এসো কার্তিকের নবান্ন উৎসবের ছন্দে
কৃষান যখন ছড়ায় সুখ নতুন ধানের গন্ধে
সুখ খুজি আশায় বসে ভাল কিংবা মন্দে
তোমার জন্য মন পবনে পরান শুধু কান্দে।
তুমি এসো অগ্রহায়নে সুর্যালোকে দেখিবার প্রাতে
দেখিতে উচাটান মন ভাবনায় থাকি প্রতি রাতে
যদি দেখা মিলে কোন উৎসবে রাখবো হাত তোমার হাতে
ছিন্ন করা নয় থাকতে চাই একিসাথে ঘাত প্রতিঘাতে
তুমি এসো পৌষের পিঠাপুলির উৎসবের সাজে
চিরায়ত গ্রাম বাংলার মেঠো পথের দুর্বা শিশিরে পা ভিজে
দেহমন একাকার হয়ে খুজে ফিরি পথের ভাজে
পাইতে মন করে আনচান বসেনা মন কোন কাজে।
তুমি এসো মাঘে দিগন্ত ছোয়া সবুজের প্রকৃত রুপে
সুখী হতে দেখবে সবে এমন ঝুটি নিশ্চুপে।
মনে হবে চির সবুজের গায়ে জড়িয়ে ধরেছে কেউ চেপে
এযেনো হাজার বছরের শ্রেষ্ট এক বহমান শান্তি যায়না দেখা মেপে।
তুমি এসো ফাল্গুনের আগুন ঝরা হলুদ সন্ধ্যায়
ফাগুনের হাওয়ায় ঝড়া পাতা হেসে বেড়ায় ফুল ভ্রমরারা অবচেতন মনে গুনগুন গান গায়
অবসাদে শুনি নুপুরের শব্ধ পাশ ফিরতেই হারিয়ে যায়
তুমি এসো চৈত্রের বুকফাটা জমিনের সীমানা ঘেষে
দিগন্ত মাঠে সোনালী ফসলে যখন কৃষকের প্রান হাসে
দেখতে তখন চায় এ হৃদয় কৃষাণ বধুর বেশে
সিদ্ধ ধানের মুড়কি খেয়ে এসো বসি আমরা পাশে।
তুমি এসো বার মাসে