কবিতা নিয়ে চর্চা সেই ছেলেবেলা থেকেই, তখন বিষয়টা খানিক ছেলেমানুশি বলা যেত। কারণ তখন বাস্তবতা অপেক্ষা আবেগের ওজনটাই ছিল বেশি। বয়সটা তখন আনুমানিক ১০-১১ হবে হয়তো। তখন থেকেই আমি দৈনিক পত্রিকা পরতাম। বিশেষ করে আনন্দবাজার পত্রিকা। রোজই কোনো না কোনো কবিতা ছাপা হতো সেখানে। সেদিন থেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম একদিন ছাপার অক্ষরে আমার লেখা কবিতাও থাকবে। তখনও ছোটদের মাসিক পত্রিকা ছিল, তবে তাদের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। সেদিন থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বড়ো হয়ে আমার এই মাতৃ ভাষা নিয়েই আমি কাজ করবো। তারপর দীর্ঘ সময় পেড়িয়ে গেল। শুরু হলো কলেজে পড়াশোনা। তখন বাংলা ছাড়াও অন্য সব বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও আমি বাংলা সাহিত্যকেই বেছে নিয়েছিলাম। কারণ সেখানে আমার প্রাণ ছিল, ভালো লাগা ছিল। তারপর কলেজে যখন আমি তৃতীয় বর্ষ তখন আমার প্রথম কবিতা 'সাধনা' ছাপা হয় বর্ধমানের 'পারিজাত' সাহিত্য পত্রিকায়। সময়টা ছিল ২০১৬ আর এবছরই পত্রিকাটি আত্মপ্রকাশ সংখ্যা প্রকাশ পায়। ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পাদকের দপ্তর থেকে যেদিন হঠাৎ দেখলাম তাদের এই সংখ্যার লেখক তালিকায় আমার নাম এবং কবিতাটি মনোনীত হয়েছে তখন আনন্দের স্রোত যেন আছড়ে পরলো বুকের ভেতর। সে বছর প্রায় ৩০০ লেখকের ভেতর ১৮ জন লেখককে পারিজাত রত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করলেন সেখানেও দেখলাম আমার নাম মনোনীত হয়েছে। তারপর সম্পাদকের আমন্ত্রনে সম্মান গ্ৰহন করতে সে রাতেই মালদা থেকে ট্রেন ধরে পৌছে গেলাম বর্ধমান। সেদিন ছিল আমার জীবনে প্রথম কবিতা ছাপা, প্রথম সাহিত্য সম্মেলনে অংশগ্রহণ করা এবং প্রথম সাহিত্য সম্মান গ্ৰহন। আজ বহুদিন চলে গেছে তবুও যেন সেই ছবি আমি রোজ দেখি।