নিটোল দেহের জোছনার মত
ফুটফুটে হরিণীকে ঘিরে এক দল হায়েনা......
এক মুহূর্তের জন্যেও হার মানি নি,
অসহায়ত্বে নিজেকে বিলিয়ে দেয়নি,
প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলাম প্রতিরোধ করতে,
দাঁত নখ দিয়ে আঘাত করেছি বার বার-
কিন্তু পশুর হিংস্রতার কাছে হেরে গেছে আমার দুর্বল প্রতিরোধ।
নিশ্চয় পরেরদিন খুব রমরমা ছিল খবরের কাগজের কাটতি,  
জানি হরিণীর অপরূপ রূপের বিক্ষত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিবরণে
প্রথম পাতায় সাজানো বেশ রসালো খবর
তোমাদের অনেকের পুরুষ সত্ত্বাকে নির্মম ভাবে টোকা দিয়েছিল।
কাম-কাতুর লালায় মুখ গহ্বরে প্লাবন উঠেছিল,
তোমাদের অনেকেই হিংসা করেছ সেই হায়েনার দলকে,
তোমাদের অনেকেই উহ আহ অনেক হম্বি তম্বি.........
তোমাদের অনেকেই ঘৃণায় ছোড়ে ফেলেছ কাগজ খানি
অনেক বাবা মা বোন করুণায় চোখের জল ফেলেছে
আর ঐ হায়েনার দল বুকভরা দম্ভে কুৎসিত অট্টহাসিতে মেতেছে!
এখনো তোমাদের মাঝেই ওরা বুক ফুলিয়ে হাঁটে!
তোমাদের চোখে আঙুল ঠেকিয়ে পরবর্তী শিকার খোঁজে!


হাসপাতালে দীর্ঘ পনের দিন মৃত্যু যন্ত্রণায় ভোগার পর
ডাক্তার সুখবর শুনিয়ে গেছে, আর ভয় নেই, সত্যি কি নেই?
বাইরে অপেক্ষারত হাজারো খর মুখ!
উন্মূক কিছু সংগঠন নিজ স্বার্থের পণ্য বানাতে!
আর বীভৎস ক্ষত চিহ্ন গুলো যা আমায় কাঁদাবে সারাজীবন।  
না আমি আত্মহত্যা করবোনা আমার পূর্বসূরিরা যেমন করেছিল,
যদিও জানি বসন্তের মত আমার সুন্দর দিন গুলো
তোমারা কখনো ফিরিয়ে দিতে পারবেনা-
তবু আমি বাঁচব তোমাদের চোখে লজ্জা হয়ে,


কিন্তু আমি লজ্জিতা নই, আমি তোমাদের করুণাও চাই না,
এই লজ্জা ঐ সমাজের যারা হায়েনা গুলোকে পুষে রাখে,
এই লজ্জা সরকারের, অর্থ বলের কাছে হেরে যায় বার বার,
এই লজ্জা ঐ বাবা মা অথবা স্ত্রীর যারা পশু গুলোর খাবারে বিষ মিশিয়ে দেয়না!


না আমি লজ্জিতা নই, আমি এই পথের বুকেই হাঁটব বুক ফুলিয়ে,  
তোমরা ইচ্ছে মত আমায় কলঙ্কিনী ডাক,
তোমরা ইচ্ছে মত আমার নিরাভরণ শরীরের অবয়ব কল্পনা করে নাও,
তোমরা ইচ্ছে মত আমায় নিয়ে কানাঘুষা কর.........
আমি জানি এ আমার কলঙ্ক নয়, এ তোমাদেরই কলঙ্ক,
এই সমাজের, এই দেশের, এই সরকারের, এই মানবতার কলঙ্ক।
আমি কলঙ্কিনী নই, অবশ্যিই আমি লজ্জিতা নই।