শহরে এত সুন্দর বস্তু থাকতেও
জঞ্জালের মধ্যে আমি যেন নিমজ্জিত-
ট্রেন-বাস-মেট্রো যেন গিলতে আসছে
আমাকে ছুঁড়তে চাইছে নর্দমায়।
ওরা কি আমাকে ভালোবাসা শেখাতে চায়?
বোঝাই হওয়া মানুষগুলোর অঙ্গভঙ্গি!


আমার গ্রাম্য চেতনায় জটের পর জট
মন-পুকুরের দু-পাড়ে গ্রাম আর শহর,
প্রাণে লালিত সংস্কৃতির ডালগুলো
আলাদা রাখতে চায় একাকীত্বের ছায়ায়।
অনুশোচনায় অবরুদ্ধ আমার বিবেক
এমন হতে পারে-নিদারুণ ভাবে অসমর্থ
বুঝতে পারছি না সহযাত্রীর ভালোবাসা!


আমি বেঁচে আছি-যেন কাঠের টুকরো-
ভালবাসতে পারিনি শহরের সৌন্দর্য
তাদের প্রেম আমার বোধের বাইরে।
নিজেকে মনে হচ্ছে শিকারের বস্তু,
তাদের চাহনি-লাগে হায়েনার দৃষ্টি
শহরে মানুষ-টানা রিক্সায় চাপা পড়া
ঠুনকো ভাবনায় তটস্থ আমার মানসিকতা।


একুশ-শতকের দ্রুত জীবন-যন্ত্রণায়
ভাবনার অবসর নেই-অথচ কাজ সহস্র গুণ,
মানুষের ইন্দ্রিয়গুলো রাসায়নিকে ভেজানো-
নিজেকে ছাড়া সবাইকে পশুর মতো লাগে
মানবিকতার ন্যুনতম দায়িত্ব হারিয়ে ফেলছে জীবন
আর হৃদয়ে ক্ষমার মরুভূমি যেন শাশ্বত।


নিতান্তই আমি মানবের বেড়ীতে বাঁধা
ই-যন্ত্রে ডেটার আস্ফালনে নয়নে সৌন্দর্য্যর খরা,
নেই প্রকৃতি-বোধ আমার অন্তরে বাইরে।
আধুনিক সভ্যতার-জামা গলানো শরীরের মধ্যে-
একুশ-শতকের হৃদয়-হীন রোবট মানুষই জীবন্ত-
যান্ত্রিকতার শাসনে আমার মানবিকতা দ্বিধাগ্রস্ত।


ক্ষমা করো মনুষ্যত্ব-আমার বিবেক-বোধ পঙ্গু
স্মার্ট যন্ত্রের চিপসের মধ্যে আমি নিমজ্জিত,
প্রেম ভালোবাসা বিরহ দুঃখের নেই আলাদা সত্তা
সর্বদাই কী যেন হারাবার নির্মম অভিজ্ঞতা
একুশ-শতকের আমি।