একদা এখানে বহতা নদী ছিল
ছিল আত্মস্বীকৃত আত্মপরিচয়,
কাদাপলির  আশির্বাদ সিক্ত দু’পাড়ে জীবনের ঠাসবুননে
জলবিরহী চাতক চাতকী, খুঁজে নিত নিজস্ব সংসার।
নিজেই নিজের নিয়মে।
একদা এখানে ছিল প্রানের জলজ ছোঁয়া
ঢেউ ছিল, তরঙ্গমালার চপল নৃত্য ছিল,
বিকেলের পড়ন্ত লাল সূর্যালোকে উচাটন কিশোরী আবেগ
রক্ত রাগে বিমূর্ত বিহবল ছন্দ ছিল।
এ সবই আলেখ্য কোনো বিস্মৃত যৌবনের।
ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার ধারাল নখর
রুক্ষ শুষ্ক মরুর হাহাকার,
শুষে নিল তার তার সলিল ধারা।
একটু একটু করে শুকিয়ে, নিঃস্ব রিক্ত হয়ে
এখন সে এক ক্ষীন দীর্ঘশ্বাস। অবরুদ্ধ অবদমিত গাঢ় দীর্ঘশ্বাস।
অবচেতন শুন্যতার রাহু গ্রাস করে চারপাশ।


একটা যৈবতি তপোবনকে
প্রতিনিয়ত একটু একটু করে প্রাণশুন্য
নিঃস্ব হতে দেখি। নিথর কুৎসিত
থেবরানো রাবারের মতো।
মূর্তিমান নরকের হলদেটে ভাইরাসে বিবর্ণ, বিশুষ্ক।
ক্যাকটাস কাটার নখরাঘাতে ক্ষতবিক্ষত
আমার প্রিয় বনের বক্ষপিঞ্জর
হাপরের ওঠানামায় ওষ্ঠাগত প্রাণে ক্রমশ,
কায়ক্লেষে জানান দেয় নিভু নিভু অস্তিত্বের।
অথচ কি না ছিল তার? অকাল বিলুপ্তির আগখানে?


একজন কবিকে প্রতিনিয়ত ছন্দহীন হতে দেখি
অথচ কি না দিয়েছে সে একদিন?
সনেট জন্মের সৃষ্টি সুখের উল্লাসে
কাগজ আর কলমের মিলনে।
কালির আঁকাবাঁকা আঁচড়ে।
কবির কলমের কালি দীর্ঘ অব্যবহারে
লেপ্টে যেতে দেখি প্যারিরাসের শুষ্ক বুকে।
তার মসি টঙ্কার তোলে না কবিতার সাদা জমিনে
অক্ষরের সাথে অক্ষরের মেলবন্ধন জুড়ে
নতুন কোনো মহাকাব্যের সন্ধানে।
কবিরা যেখানে ভাষাহীন
কলম যেথায় অক্ষরশুন্য, ভাষা যখন অর্থহীন।
কবিতা লেখা তখন অকারন বিলাস।
ছন্দ শব্দহীন বোবা আতুড়ে
কবিতাদের নিয়ত অবরুদ্ধ বসবাস।