আজ ভোর বিহানে, অদ্ভুত কালো দুঃস্বপ্নের ঘোরে,
ঘুম ভাঙল ভয়ের কুৎসিত কালো চাদর মুড়ে।
রাত ঘুমে কালো কালো দুঃস্বপ্নেরা এসে,
সবেগে ভর করেছিল আধো ঘুম, আধো জাগরণের রহস্য সময়ে,
আমার পুরোটা সত্তা জুড়ে।
সেই পুরোনো দুঃস্বপ্নের অশনি ডাক, প্রত্যাখ্যানের দগদগে স্মৃতি, সেই অতন্দ্র অমানিশা,
যার পুরোটা ই কেবল বর্তমান, যার শুরু নেই,
অন্ত, বর্ণ, অর্থহীন সেই বোবা কান্নার অভিজ্ঞতা, যার দৃশ্যমান অবয়ব নেই।
আছে শুধু কিছু গাঢ় কালো, আছে আতঙ্ক আর ঘনায়মান অবোধ্য ধোঁয়াশা,
সত্যের মুখোমুখি, অসত্যের রহস্য মাখা সফেদ কুয়াশা।
বাস্তবতার তীব্রতা, ব্যর্থতার হাতছানিতে কুঁকড়ে যাওয়া, গুটিয়ে যাওয়া মানব সত্তা,
জীবন যেখানে সতত সংশয়ে অবনত,
সত্যেরা যেথা সদা উদ্যত, উদ্ধত,
সেই কল্পিত নরকে, পাপাচারের ক্ষণিক অবসরে,
অপরাধ বোধের তীব্র শরাঘাত, বিদ্ধ করে লোভের কৃপাণ তলে,
সত্যেরা অনাহুত মাথা তোলে মৃদু আলোড়নে, নিদ্রার অস্তাচলে।
আমি সবেগে ছুটি, পলায়নপর আমি ছুটি বাঁচার প্রয়াসে,
আপনার আপন খেয়ালে,
এ এক রুদ্ধশ্বাস আঘাত, এক ক্রমাগত তাড়িয়ে চলা ভয়,
পাপবিদ্ধ অন্তরে, নরকের অগ্নি সম বোধ ঢালে সংশয়।
আমি ছুটছি, ছুটছি, ছুটছি অজানা আতঙ্কে,
পাথরের মতো ভারী পায়ে, গতিহীন নিশ্চলতার অমোঘ পিছুটানে,
সংসার বাঁধন, জাগতিক মায়া, দায়িত্বের নিষ্ঠুর চাপ-সব, সব ফেলে ছুটছি অবিশ্রাম।
মুক্তির আশে নিদ্রা-জাগরণে, আতঙ্কের মূর্তিমান হুতাশন হতে,
মৃত্যু-সেও অতি তুচ্ছ এই রাহু সম্মুখে।
তাই আমি অবিশ্রাম ছুটি, ছুটি। ছুটে পালাই নিজের ই হতে,
পিছু ফেলে যত পঙ্কিল, যত প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য পাপ,
অব্যাখ্যাত অশরীরি আতঙ্কের নিধূ প্রভাতে।