তুমি আমার কিছুটা সময় কিনে নিয়ে থাকতে পার
কিন্তু আমার আত্মাকে কিনে নিতে পারবে না।
ওটা বিক্রি হবার নয়।
হবার নয় কিংবা করব না।
আমার শৈশবটাকে কিনে নিতে পার
আমার বাল্যস্মৃতিটুকু নয়
আমার শৈশব বিকিকিনির যোগ্য শৌখিন পণ্য নয়।
আমার রাতের ঘুমটুকু কিনতে পার
ঘুমের মাঝের সুখ স্বপ্নটুকুকে কিছুতেই নয়।
সে কিছুতেই তোমার লোভের উপযুক্ত নয়।
অনায়াসে মাথার ওপরের ছাদটুকু কেড়ে নিতে পার
কিন্তু নিঃসীম নীলাকাশটাকে?
ওতো কারো একার মোটেই নয়।
বিকেলের শেষ অস্তরাগটুকু মুছে দিতে হয়তো পার
আকাশের সিঁথির সিঁদুরটুকু নয়
চৈত্রের দুপুরটাকে ছিনিয়ে নিতে পার এক লহমায়
দালানের পাশে দুপুরের ছায়াটুকু নয়
ওটা আমার সাথে প্রিয়ার একান্ত নিজস্ব সময়।
জোর করে ছুড়ে ফেলতে পার হাতের পেয়ালাটা
তাতে রয়ে যাওয়া শেষ চুমুকটুকুও
তাতে কি এসে যায় তেমন কিছু?
তুমি আমার ওষ্ঠে লেগে থাকা নেশাখোরের তাচ্ছিল্য হাসিটা
কাড়তে পারবে না কিছুতেই।
আমার কন্ঠকে রুদ্ধ করতে পার নির্মম হাতের পেষণে
কিন্তু আমার সুরকে নয়
সুরলহরী বেঁচে থাকে, সুরের সাধনায়
নির্মম দলনে ছিন্নভিন্ন করতে পার আমার বীণার সবকটা তার
শিল্পীর সুরকে কাড়তে পারবে না।
আমার টুটি টিপে ধরে কন্ঠকে রুদ্ধ করতে পার
আমার অন্তরাত্মার ডাকটুকুকে নয়।
সে সবটুকু শক্তি জড়ো করে আমায় জাগিয়ে রাখে অষ্টবেলায়
সেখানে তোমার খসখসে নখর পৌছাবার নয়।
তুমি হয়তো বড়জোড় আমার লেখার কলমটিকে কেড়ে নিতে পার
নিংড়ে লেপ্টে দিতে পার তার শেষ কালিটুকুও
কিন্তু অক্ষরের ছন্দমিলটুকু কিছুতেই ভুলিয়ে দিতে পারবে না।


তুমি আমার কবিত্বের চৌহদ্দিতে হানা দিতেই পার
দস্যুর মতো অতর্কিতে সব লুটে নিতে পার হয়তো বা
কিন্ত আমার মনের পান্ডুলিপিকে নয়।
ওগুলো তোমার কিছুতেই হবার নয়।
সবকিছুই হাতবদল হতে পারে
কবির অন্তরাত্মার ম্রিয়মান আলোটুকু কখনো নয়।
ওটুকুই তার শেষ সম্বল
ওখানে তোমার ভিক্ষা বা জিঘাংসার লোলুপ থাবা
প্লিজ, আর নয়।