শ্রাবনের একটা অযাচিতভাবে পেয়ে যাওয়া
অবাঞ্চিত সকালে
গাঁয়ের পথে নেমেছিলাম আকাশ দেখব বলে
একটা সম্পূর্ন আকাশ। যেটা এই নগরে দুর কল্পনা
স্লোগানে, বিলবোর্ডে, আকাশচুম্বি অট্টালিকায়
সে এখানে শতধা বিভক্ত আল্পনা।


শহরের আকাশে মায়া থাকেনা।
সেখানে শুধু রাতের নিয়নের হলুদ আলোর উচ্ছিষ্ট
নাগরিক কোষ্ঠকাঠিন্যের বিষাক্ত আঁচড়।
নিজেই নিজের সাথে নিয়ত যুঝে চলা।
তাই আমি গাঁয়ের পথে নেমেছিলাম আকাশ দেখব বলে।
একটা সম্পূর্ন আকাশ কতদিন দেখি না।


সেদিনও আকাশটা নীল ছিল
হয়তো আর দশটা আটপৌড়ে দিনের চেয়ে একটু বেশীই।
আরও বেশি গাঢ় কিন্তু খেয়াল করিনি।
আকাশের দূঃখ মেঘকে দেখে
তার নীল বেদনার তীব্রতাকে অনুভব করতে পারিনি।
অপরাজিতার মতো,
নীলকন্ঠের মতো
বেদনাকে সে ধারণ করে দিগন্তের ছাঁয়ে।
পেঁজা মেঘের থরে থরে
লীন হয়ে থাকে টুকরো টুকরো যন্ত্রণা।


তোমরা যাকে বর্ষার আগমনি ভাবো
সে তার টলমল অশ্রু, অভিমানি চোখের ।
পরম যত্নে মরমের গভীরে লুকিয়ে রাখে ফোটায় ফোটায়
হৃদয় উপচে গেলেই তবে বৃষ্টির কণা হয়ে
বর্ষিত হয় ধরার বুকে।
তোমরা অবশ্য সামান্যই তার খোঁজ রাখ।
বর্ষা তোমাদের কদম ফোঁটার মাস
আকাশের বৃষ্টি বিলাস থাকতে নেই।

শরতের শুভ্র যে মেঘকে নিয়ে তোমরা কবিতার খাতা ভরো
উদাস হও কারনে বা অকারনে,
কৃত্রিম তুলির আচড়ে ফুটিয়ে তোলার ব্যর্থ প্রয়াস পাও
অস্পর্শিত ক্যানভাসে
শুভ্র শরত বনাম খসখসে ক্যানভাস
সেতো তার বৈধব্যের বিসর্জন সাজ।
কালো ডানা চিলেরা শুধু খোঁজ রাখে আকাশের
শুভ্র আকাশ কালো ডানা চিল।


সেই শৈশব থেকে
যখন প্রথম নেংটো ছেড়ে ধরেছি হাফ পান্তালুন
তখন থেকেই আকাশের মতো হতে চেয়েছি
যে সবার দৃষ্টির আড়ালে
নীল কষ্টকে ধারন করে
নিঃস্বার্থ বন্ধুর মতো
যে রামধনুর সাত রঙের আড়ালে তীব্রতম রঙটিকে লুকিয়ে রাখে
সবচেয়ে গাঢ় আবার সবচেয়ে প্রিয়
বেদনার রং নীল।