দিনটা ছিল বৃহস্পতি, একুশ তারিখ রাত...
বিকেলবেলা ঢাকায় কিসের হয়েছে সংঘাত...
আসমানীদি খবর পেল সন্ধ্যাবেলার দিকে...
কষ্ট দেবার খবর সেটা, বড্ড বেশি ফিঁকে...
ঢাকার দিকে পুলিশগুলো ছুড়ছে নাকি গুলি...
শফিকটা যে কোথায় আছে, জানলাগুলো খুলি...
কিসের নাকি আন্দোলনে, সকালবেলায় গেলো...
সকালবেলার নাস্তা সেটা, একটুও না খেলো...
ভাবনা বাড়ে, শঙ্কা বাড়ে আসমানীদির মনে...
না জানি তার ভাইটা এখন, আছেই বা কোনখানে...
মা-বাপ হারা আসমানীদির ছোট্ট একটা ভাই...
একেই নিয়ে ভাবনা যত, কোথায় বলো যাই...
ভাইটা আমার একদিন ঠিক অনেক বড় হবে...
দেখিস তোরা ঘুচবে আমার, দু:খগুলো তবে...
এমন অনেক চিন্তা করেই আসমানীদি হাসে...
সন্ধ্যা গড়ায়, শফিক কোথায়, এইতো বুঝি আসে...
বায়ান্ন সাল, ফেব্রুয়ারী, রাত পোহানোর পরে...
আসমানীদির ছোট্ট শফিক আসলো ফিরে ঘরে...
জীর্ণ শরীর, শার্টটা ছিল, রক্তজলে মাখা...
কিসের একটা লেখার কাগজ, বুকপকেটে রাখা...
আসমানীদি ভীষণ অবাক, শফিক, এসব কিরে...
দিদির কথা শুনছে না সে, ঘুমাচ্ছে সে ধীরে...
পাশ থেকে দুই ছেলের গলা, আসমানীদি, ও যে...
চলে গেছে অন্য দেশে, অন্য কিছুর খোঁজে...
পুলিশ যখন হামলা করে, শফিক ছিল আগে...
সামনে থাকায় একটা গুলি, বুকের ভেতর লাগে...
সেদিন থেকে আসমানীদি আর বলেনি কথা...
আসমানীদির আশি বছর, ঢালছে আজো ব্যথা...
( শফিকের বুকপকেটের লেখায় ছিল, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, আমি আমার দিদির জন্যে বাংলা চাই )