চারিদিক কেমন নিস্তব্ধ নিশ্চুপ হয়ে আছে
যেন এক্ষুনি ঝড় উঠবে,
ঈশান কোনের ঐ লাল মাখা মেঘটা
বাতাসের তোড়ে ভেঙ্গে খান খান হবে,
চারিদিকে শন শন আওয়াজ করে
উড়িয়ে নিয়ে যাবে গাছ পালা, বাড়ি ঘর ;
পাখিরা অসহায় হয়ে খোলা আকাশের নীচে
নাহ্, শুধু পাখি নয় কিছু মানুষ যারা অসহায়
পাখিদের মতন ; তারাও ভাসবে ।
বন জঙ্গলের পশুদের কথা ছেড়েই দিলাম
গবাদি'রাও কি কম অসহায় !
ঝড় উঠবে, দেয়া ডাকবে
সভ্যতার সোপানে সোপানে গড়া
মোবাইয়েল টাওয়ার, বিদ্যুতের খূঁটি
ক্যাবলের তাঁর সব কিছু ভেঙ্গেচুরে
খন্ড বিখন্ড কঙ্কাল নিয়ে স্মৃতি চিহ্ন হয়ে যাবে !
কিন্তু ঝড় আসছে না কেন !
ঝোল বাড়ান্দার অর্কিডের টবটা সড়িয়ে
পোষা ময়নার খাঁচাটা রেখেছি ভেতরে
দড়জা জানালায় খিল দিয়ে বসে আছি
মেইন স্যুইচ অফ করে,
আকাশের একটা ছবি নেব বলে
ছাদে গিয়ে দাড়িয়েছি ডি এস এল আর টা নিয়ে
রাস্তায় তখনো দু একটা পথচারী হন্তদন্ত হয়ে ।
ঝড় আসলো না, ঝর আসছে না ;
হয়তো বা প্রকৃতি ভয় পেয়েছে
আমার মতোই, আমি যেমন ভয় পাই
প্রতিবাদ করলে, প্রতিবাদী হলে যদি
...দ্রোহী হয়ে তালিকায় নাম উঠে লাল কালিতে !
আমি যেমন ভয় পাই, রাতে যদি আগুন জ্বলে !
অথবা রাস্তা ঘাটে অপমৃত্যু ঘটে !
প্রতিবাদ করলে যদি, তথাকথিত এই সমাজে
একঘরে হয়ে যাই, বঞ্চিত হই সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে !
প্রতিবাদী হলে যদি,
পথে প্রান্তরে আমার দিকে মানুষ চায় আড় চোখে !
নিমন্ত্রণ খেতে গেলে চড়াও হয় যদি খাওয়ার টেবিলে !
এসো হে ঝড় তোমি এসো ঝড় হয়ে
প্রকৃতির বুক বেয়ে পৃথিবীকে ধুয়ে মুছে সাফ করে যাও,
ভয় পেয়ো না তোমি, তোমি প্রকৃতি !
তোমি তো আর আমার মতো মানুষের সমাজে
ঘাত প্রতিঘাতে তৈরী হওয়া মধ্যবিত্ত কাপুরুষ নও !
কেননা, এই নীরবতা ভাঙ্গতে বড় প্রয়োজন তোমার
মানচিত্রের পাতায় আঁকা রোধি ধারার নদী গুলো
মুছে দিতে হবে এবার,
'ধরা কে সরা জ্ঞান করা' - মানুষগুলোর মেরুদন্ড
ভেঙ্গে দিতে হবে তোমার, তোমি ঝড় হয়ে এসো,
"আগুন পাখি" আমি নাম দেব তোমার ।