আমি অধুনা বাংলাদেশের বারুইগ্রামের
নজিমদ্দির পোলার ঘরের দ্বিতীয় নাতির তৃতীয় সন্তান,
আমার বাবা হানিফ মোল্লার শেষের বিবি
জোলেশা বেগমের কনিষ্ট পুত্র গোলাম নবী রব্বান ।
যখন তিন তালাকে ঘর ছাড়লেন আম্মা
তখন আমি দুধের শিশু, গায়ে একটা জামা,  
নানুর বাড়ির গোলা ঘরের পাশে জমি দুই গন্ডা পেয়ে
হলকা পাতার ছাউনী ঘরে বিড়ি বেঁধে আমায় রাখল বাঁচিয়ে ।
শুনেছি বারুই গ্রামে নজিমদ্দি রোড আছে
এখনো শিশু ঘুমায় নজিমদ্দির ভয়ে,
নজিমদ্দির নাম শুনলেই নাকি
এক ঘাটে জল খায় বাঘে-গরুতে ।
হানিফ মোল্লার আশিতে ইন্তেকালের আগে
আরেকটা বিবি নিয়েছিল এক রূপসী ষোড়শীকে,
রাষ্ট্রপতির পুরস্কার আজও  বাধাঁ দেয়ালে
সত্তর কেজির মিষ্টি কুমড়া ফলিয়েছিল বলে ।
মা বলছিল, "ব্যাটা, এন আর সি, না কি হবে !
তর আব্বা ত এয়েছিল স্বাধীনতার আগে, দেখনা গিয়ে
একবার কাগজ পত্তর চেয়ে !"
আমি আড়াইশ কিলোমিটার পথ বেঁয়ে
মুর্শিদাবাদ গিয়ে যখন জানলাম পরিচয়ে,
আমার পিতৃপুরুষ কেউ নেই এদেশে
কেউ গেছে দুবাই-কূয়েত, কেউ বাংলাদেশে,
তখন আমার আক্কেল গুড়ুম, মাথায় বজ্রাঘাত
কি করে জান বাঁচাই বল, কি অপরাধ ?


এদেশ এখন বড়ই নিষ্ঠুর, বড়ই বিষ্ময় রাজ
মানুষ হয়ে মানুষ হবার প্রমান জরুরী আজ ।