ভ্রমণের কিছুদিন পরেই ভ্রমণের সেই আবেগ আকর্ষন কমে যায়, যদিও এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত ধারনা ছিল । কিন্তু এখন দেখছি, এই কুষ্টিয়া ভ্রমণের পর যত দিন গড়াচ্ছে ততোই যেন সেই ভাল লাগা প্রকাশ করার আগ্রহটা আরোও বৃদ্ধি পাচ্ছে । সেই ভ্রমণের সময়ে কথা দিয়ে এসেছিলাম শীঘ্রই লিখবো কিন্তু আজ অব্দি সেই শীঘ্র কাল শেষ হয়নি । যাই হোক, আসলে এত ভনিতা করতে হচ্ছে একটা কারনেই, সেটা হচ্ছে আমি যে স্মৃতিকথা লিখতে যাচ্ছি, সে অনেক দিন হয়ে গেল ।  বাংলা কবিতা ডট কমের আন্তর্জাতিক কবি সম্মেলন – ২০২৪ ইং এর মূল পর্ব শেষ করে তারও একদিন পরে অর্থাৎ ২৫ শে ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইং মূলতঃ প্রিয় কবি দিদি আফ্রিনা নাজনীন মিলি ও কবি দাদা জাহেদ হাসান রঞ্জু দাদার তত্তাবধানে আমাদের কুষ্টিয়া ভ্রমণের প্রাথমিক পর্ব অর্থাৎ ঢাকা টু কুষ্টিয়ার রাস্তার কথা গত পর্বে বলেছি ; আশা করি আপনাদের ভালোই লেগেছে, আর আমরা যারা গেছিলাম আমাদের এই অনন্ত ভালোলাগা ভাষায় বুজানোর সাধ্য নেই, সেই অক্ষমতার কথা বার বার বলেও আবার লিখি এই কারণে যে, যতটুকুই পারি অন্তত লিখে রাখি যেন ইতিহাস হয়ে থাকে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ।
যাকগে সে কথা , আজ ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইং রাত ৯টার পরে প্রিয় মিলি’দির বন্ধু আমাদের সকলের প্রিয় সাজু ভাই (সাজ্জাদ হোসেন) যিনি একাধারে একজন মাননীয় আইনজীবী, ঢাকা শহরের প্রতিষ্ঠিত এক রেষ্টুরেন্ট এর মালিক এবং সেই সঙ্গে উনি দুই দুইটি এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক –এর হাত ধরে গিয়ে উঠলাম, ,“ হাজী কিয়ামত আলী বিশ্বাস গেদিরননেছা বালিকা এতিম খানা” কুমারখালী, কুষ্টিয়া । সেখানে পৌছে এই রাতের বেলায় মনোরম ফুল ও ফল বাগানের স্নিগ্ধ হাওয়ায় রূপালী চাঁদের মিষ্টি জ্যোৎস্না গায়ে মেখে শীতল দেহে প্রথমেই বাহারি ফলের সঙ্গে ঠান্ডা পানীয়ের অভ্যর্থনা অতঃপর মিলি’দি এন্ড কোং এর পুর্বঘোষিত চিতুই পিঠা হাঁসের মাংস সহ আনুসাঙ্গিক খাবারের এলাহি কারখানা ডিঙিয়ে আরোও এক ধাপ প্রত্যাশার চাইতে বেশী আপ্যায়নে দু-তলা খাটে সাজানো একটা সুসজ্জিত সুন্দর ঘরে সবাই ঘুমোতে গেলাম, অবশ্যই নারী-পুরুষ পৃথক পৃথক ঘরে । পরদিন সকালে উঠে এই দু-তলার ছাদে উঠে গায়ে যখন গড়াই নদীর নির্মল বাতাস লাগলো এবং এক অসাধারন কোমল আবহাওয়া অনুভব করলাম, সেই অসাধারন ভালো লাগা মুহুর্তগুলো আজ পর্যন্ত একটুও ভুলতে পারিনি । তারপরেই মিলিদির ডাকে সারা দিয়ে আমরা সবাই চলে গেলাম গড়াই নদীর কূলে । গায়ের পথ, পথে পথে ভালো লাগার নষ্টালজিক দৃশ্য সেই সঙ্গে ঢাকা মহানগরের ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা মাড়িয়ে গিয়ে কুয়াশা সিক্ত সকালের প্রাতঃ ভ্রমণ ! এই অনুভুতি লিখে প্রকাশ করার নাম সাহিত্য জানি কিন্তু সেই সাহিত্যের দোর গোড়ায় যাওয়ার সাধ্য যে নাই তা টের পাই আমার প্রকাশের অক্ষমতা দেখে । গড়াই নদীর আদিকথা, ইতিহাস এবং বর্তমান ইত্যাদি খুব সুন্দর ভাবে পরিবেশন করছিলেন এতিম খানার অন্যতম কার্যকর্তা হিরু ভাই ।  আমরা এই জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি নদী তটের মটরশুঁটি সংগ্রহ করছিলাম এবং সেই সঙ্গেতো অবিরাম ছবি তোলার কর্ম চলছেই । পুবাকাশে সূর্যের আলো উঁকি দিতে না দিতেই আমরা সকলে   মিলে নদীতট ছেড়ে গাঁয়ের পথে পা বাড়ালাম । নানান গাছ গাছালি, বাঁশ ঝাড় ইত্যাদি দেখতে দেখতে গাঁয়ের সমতল পথে আমরা যারা পাহাড়ি ত্রিপুরা থেকে গেছি, আমাদের কাছে তো অপরূপ মুগ্ধতার ছোঁয়া বলতেই হবে । তবে এক সঙ্গে যখন এতগুলো ভিনদেশী মানুষ রাস্তা দিয়ে হাঁটে আর মিলি’দি রঞ্জু ভাইদের মতো প্রাণবন্ত মানুষ সঙ্গে থাকে, সেই গ্রাম সরগরম হয়ে উঠে এমনিই এবং গ্রামের মানুষ আমাদের মিছিল দেখতে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে শুরু করে, কেউ কেউ পা মেলায় আমাদের সঙ্গে । এমনি করেই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয় সেখানকার স্থানীয় একজন কবি দাদা ( নামটা মনে করতে পারছি না, আশাকরি হুমায়ূন কবীর বা মোজাম্মেল হোসেন ভাই কমেন্টে নামটা লিখে দেবেন)  । গ্রামের চায়ের দোকানে গিয়ে, চা খাওয়ার পাশাপশি চলে কবি ও কবিতা পাঠের আড্ডা । প্রকাশ থাকা আবশ্যক, ঐ চায়ের দোকানে শেষ পর্যন্ত মালিক সরিয়ে মিলি’দি দোকানদারি করেছিল বেশ দাপটের সঙ্গে। অতঃপর এতিমখানায় ফিরে গিয়ে চটজলদি চা-নাস্তা সেরে সাজু ভাই ও হিরু ভাই এর পরিকল্পনা মোতাবেক দুইটি লাক্সারী প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম সেই প্রতীক্ষিত ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখার জন্য । গাড়িতে উঠে, এত আনন্দ আর রোমাঞ্চ পেয়ে বসেছিল , ভুলবোনা কোন দিন । কবিদের ভাবনার ফসল, যখন যেখানে যাবে সেই থিমে গান শোনানো হবে সেই সঙ্গে গলা মেলালেন সকলে । যেমন, যখন লালন শাহের বাড়ি যাচ্ছিলাম তখন লালনগীতি, যখন রবীন্দ্রকুঠি যাচ্ছিলাম তখন রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং যখন বাংলার সেই বিখ্যাত কবি মীর মোশারফ হোসেন এর বাড়ি যাচ্ছিলাম তখন উঁনার সেই অপুর্ব/বিখ্যাত সৃষ্টি “বিষাদসিন্ধু” কাব্যগ্রন্থের  থেকে কবিতা পাঠ । আহা ! কি অপরূপ সেই অভিজ্ঞতা । এই রকম ভাবে আবেগ আর  ঐতিহ্যের মিশেলে সবুজের সমারোহে ধীরে ধীরে  হার্ডিংস  ব্রীজ পেড়িয়ে আমরা গিয়ে পৌছলাম সেই প্রতীক্ষিত স্থান লালন শাহ্ এর বাড়ি । মূল ফটকের সামনেই পাখির সমারোহ দেখতে থমকে দাঁড়াতে হল কিছুক্ষণ । ভেতরের দিকে প্রতিটা পদক্ষেপেই যেন চমক অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য । লালনের স্মৃতি বিজড়িত আনাচ কানাচেও জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল শ্রেনীর মানুষের অবিমিশ্র সম্মিলন উপভোগ শেষে আখড়াতে গিয়ে গান-বাজনার সার্বক্ষণিক আয়োজন দেখে আবেগের ডুব সাগরে ডুবে গেলাম সকলে । সব ভালোর পেছনে কিছু কালো থাকলেও সেগুলোকে দৃষ্টিগোচর না করাই ভালো । প্রানখোলে সকলে মিলে নেচে গেয়ে বিদায় নিলাম সেখান থেকে, সঙ্গে নিলাম হাজার হাজার সেলফি সহ সাজু ভাইয়ে ডি এস এল আর ক্যামেরায় বন্দী স্থিরচিত্র । বাইরে এসে একতারা কেনার ভিড় । একতারা হাতে নিয়ে গাড়িতে উঠে,”তোমরা একতারা বাজাইয়ো না …” দিয়ে শুরু করে “যেদিন পরবেনা মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে”-রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনতে শোনতে গাইতে গাইতে যখন  রবীন্দ্রকুঠির সামনে গিয়ে নামলাম, বন্ধ গেইট দেখে আমাদের সকলের চক্ষু তো চড়কগাছ ! কি এক বিশেষ ছুটির দিন ছিল সেদিন, যদিও শুক্রবার নয়, এই কারণেই আমাদের মতো আরোও হাজার হাজার পর্যটক না জেনে সেখানে গিয়ে ভিড় করেছে । এবারে শুরু  আফসোসের পালা তবে যাদের টিমে আফ্রিনা নাজনীন মিলি, জাহিদ হাসান রঞ্জু, সাজ্জাদ হোসেন কিংবা হিরু ভাইয়ের মতো গুণিন মানুষ থাকে তাদের দৌড়টা একটু বেশী থাকে, হাতটা লম্বা থাকে অনেক । নানান জায়গায় ফোন শুরু হল, সেই ফাঁকে আমরা অন্যরা সামনের মাঠে মেলার আয়োজনে নিজেদের মিশিয়ে দিলাম, ঘোড়া চড়ার শখ মিটিয়ে নিলাম, কিছু কিছু কেনাকাটাও করে নিলাম । ততক্ষণে খবর হল, শুধুমাত্র আমাদের জন্য ( ভারতের বিশিষ্ট অতিথি বলে ) বিশেষ পারমিশান পাওয়া গেছে এবং সেই মোতাবেক গেইট খোলে আমাদের সতের জনের টিমকে ঢোকতে দেওয়া হল এবং সঙ্গে একজন বিশেষ গাইড দেওয়া হল, যদিও এ নিয়ে কুঠিবাড়ি ক্তৃপক্ষের স্থানীয় ভাবে অনেক গেঞ্জাম সহ্য করতে হয়েছে তবে আমরা যে কত মহান মানুষের সংস্পর্শে ছিলাম সেটা একটা জলন্ত উদাহরণ । সে যাই হোক, রবিঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত প্রতিটি ঘর, বাগান, রাস্তা, সিঁড়ি, রান্নাঘর, পুকুর, দেয়াল এমনকি পুকুরপাড়ের সেই বিখ্যাত শিমূলতলা, বকুল তলা ইত্যাদি যত দেখছিলাম ততোই মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ হৃদয়টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলাম, এত সুন্দর আয়োজন এবং উদ্যোগের জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না । সবচাইতে আকর্ষনীয় বিষয় ছিল, পুকুর পারের হিমেল হাওয়ায় গা ভাসিয়ে ছবি তোলার হিড়িক, মিলি’দিতো পোশাক ভিজিয়ে জলে নেমে যাচ্ছিলো । এভাবেই দিনের একটা পর্ব শেষ করে বেড়িয়ে আসলাম সেখান থেকে যদিও বাইড়ে এসে আরেক প্রস্থ কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত কিছু কিছু কেনাকাটা হয়েছে । তারপরে সূর্য যখন মাথার উপরে, পেটে যখন টান পরেছে, আমাদের নিয়ে গেল কুষ্টিয়ার আলাউদ্দিন নগরের সেই বিখ্যাত খাবারের হোটেল ‘সততা হোটেল’, সেখানে সমস্ত সুন্দর খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি আকর্ষনীয় খাবার ছিল ল্যাটা মাছে ভর্ত্তা, এছাড়াও ছোট মাছের অপুর্ব ব্যঞ্জন । খুব বেশী সময় নষ্ট করতে দিলো না আমাদের, সেখান থেকে সোজা চলে গেলাম কবি মীর মোশারফ হোসেন এর বাড়ি , সেখানে উঁনার সংগ্রহশালা পরিদর্শন শেষে পরিবারের সদস্যদের নিকট থেকে জীবনী সম্পর্কিত কিছু বই সংগ্রহ করে তারাতারি ফেরার পথ ধরতে হলো কেননা ততক্ষণে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসার প্রস্তুতি চলছে দিগন্তে । হিরু ভাইয়ের তদারকিতে এবারে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ের বিখ্যাত সাংবাদিক কাঙ্গাল হরিনাথের এর বাড়ির ঐতিহ্য চাক্ষুষ করে ফিরে আসলাম । ফিরে আসলাম বটে, তখনো সূর্য ডুবেনি তাই সময় নষ্ট করতে রাজী নয় কেউ তাই এবারে আবার আমাদের গন্তব্য ঠিক হল শিমূলিয়ার ইউ টিউব ভিলেজ, তড়িঘড়ি গন্তব্যে গিয়ে আমাদের সকলের চোখ ছানাবড়া হল । এত সুন্দর একটা পার্ক, এত পরিপাটি করে সাজানো একটা কমপ্লেক্স ! যা কিনা শুধুমাত্র অনলাইন রোজগাড়ের সৌজন্যে গড়ে উঠেছে ! এক আকাশ বিস্ময় নিয়ে অবাক চোখে ঘুরে ঘুরে সবাই মিলে ফুলের সমারোহে সেলফি, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি করতে করতে রাত করে ফেললাম, তবুও যেন আফসোসের শেষ নেই, কেন দিনটা আরোও বড় হলনা, আমরা কেন আরোও আগে আসলাম না ইত্যাদি । ফেরার পথে আমরা বাজার থেকে সবাই মিলে আমাদের সকলের প্রিয় প্রতিষ্ঠান গেদেরুনেছা বালিকা এতিমখানার মিষ্টি মিষ্টি পবিত্র বালিকাদের জন্য কিছু খাবার, পড়াশোনার সামগ্রী ও শীতবস্ত্র নিয়ে ফিরে সারাদিনের ক্লান্তিকে এতিমখানার স্নিগ্ধ বাতাসে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে বালিকাদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে, উপহার সামগ্রী বিতরণ করে রাতের খাবার খেতে গিয়ে আবার অবাক করার মতো খাওয়া দাওয়ার এলহি কারখানা , কি নেই আয়োজনে ! পোলাও, মাংস (দুই পদ),মাছ(দুই পদ), মিষ্টি, দই ইত্যাদি ইত্যাদি । খাবার শেষে বাইড়ে এসে দেখি, এতিমখানা ক্তৃপক্ষের আহ্বানে কুমারখালি এলাকার বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট হিন্দু ব্যক্তিত্ব আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন । উনারা কেউ আমাদের জন্য সংবর্ধনা স্বরূপ  কলম, কেউ ফুল, কেউ ঐ এলাকার বিশিষ্ট  খাবার ইত্যাদি নিয়ে এসেছেন, এসেছেন গোয়াল পাড়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উনার উৎপাদিত ঘি নিয়ে ; কিছু হিন্দু মহিলাও এসেছেন আমাদের সঙ্গে আন্তরিক বার্তালাপের উদ্দেশ্যে । এই ঊষ্ণতা, এই মুগ্ধতা, এই তৃপ্ততা জীবনের চলার পথে খুব ভাগ্য ভালো হলে মিলে । আমাদের সকলের ভাগ্য ভালো নিঃসন্দেহে । পরদিন সকালে উঠে তড়িঘড়ি করে আমরা বেড়িয়ে পরার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে দেখলাম আতীথেয়তার কোন চুরান্ত পর্যায়ে গেলে এই ভোর বেলাতেও আমাদের জন্য একাবের পিঠেপুলি বানিয়ে সারাদিনের উদরপূর্তির মতো একটা নাস্তা রেডি করে ফেলেছেন । আমিতো একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে শেষ পর্যন্ত রান্না ঘরে গিয়ে সেই এতিমখানার রাঁধুনি মিষ্টি দিদিটার সঙ্গেও কিছু ক্ষনের জন্য গল্প করে আসলাম । তারপর চোখের জলে বিদায় নিতে হল । দুই দিনের এই ভালোবাসার বন্ধন কতটা দৃঢ় হতে পারে সেটা বুজা যাচ্ছিলো মিলি’দির চোখের জল দেখে । রঞ্জু ভাইয়ের মতো প্রাণচঞ্চল সদা হাস্যময় মানুষের হৃদয় কতটা কোমল সেটা টের পেয়েছি এতিম খানা ছেড়ে আসার সময় । এই ভালবাসা, এই শ্রদ্ধা, এই আপ্যায়ন যে আঁচরটা হৃদয়ে দাগ কেটে দিল, বেঁচে থাকবে অনেক অনেক দিন । সেই জিলিপি মোড়ে এসে আবার খেজুরের রস পেয়ে গেলাম, প্রাণ ভরে পান করে পদ্মাসেতু পাড়ি দিতে বাসে চেপে বসলাম । আরো আরো অনেক কথা, অনেক হাসি ঠাট্টা, অনেক তামাশা, অনেক খুনসুটি, ছোট খাট ঘটনা বার বার মনে আসলেও এখানে আর লেখার জো নেই । সবশেষে আশাকরি, বাংলা কবিতা ডট কমের সৌজন্যে এভাবেই বার বার মুগ্ধতার ছড়াছড়ি হবে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে, কখনো এপাড়ে কিংবা কখনো ওপাড়ে । কবিতা আর সাহিত্যের রংধনু আমাদের জীবন রাঙিয়ে আকাশে জ্বল জ্বল করবে চিরকাল কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে ।  
   এভাবেই আরো কারো উদ্যোগ এব্ং উদ্দীপনায় আগামী দিনে আরো আরো অনেক সম্মেলন আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে এই প্রত্যাশা রইল ।