কিষাণ গঞ্জের কালীর মা , দ্বারে দ্বারে ভিখ্ মাগে
ভীষন ব্যস্ত কালী চরন, সব কাজে সবার আগে ;
লক্ষ কোটির হিসেব গুনে, থেকে থেকে গোমস্তা সনে
মন্দ নয় আসয় বিষয়, আবাস পূর্ণ ধনে জনে ।
কালীর মা লিকলিকা, গলার সুরে সদা সপ্তম
স্বামী হারা আজ অভাগা, দেশ ভাগে ছাড়ে অসম ।
যৌবন রাঙ্গা স্বপ্নে ভরা, সুডৌল পৌরুষ পতির দারা
রাতের কালো আপন করা বছর বছর সন্তান গড়া ;
কিষাণ গঞ্জ হাতের 'পরে গ্রামের শেষে শহর সেজে
কালীর মায়ের পা তাঁতায় কালো পীচের পথের মেঝে ।
কাকের বাসায় কোকিল চুপে ডিম রাখেনা এখন আর
খেঁকশিয়ালে নেয়না মোরগ ঘুঘু ডাকার নেই ঝাড় ।
তবুও কালীর মায়ের সুখ নাই মনে দিনে রাতে
বৌয়েরা সব হাল ফ্যাসানের বাধ্য নয় শাশুরীতে ।
দিনের বেলায় ছেলেরা সব যে যার কাজে মত্ত
রাতের বেলায় ক্লান্ত ওরা সোহাগী স্ত্রীর ভক্ত ।
খাবার ঘরেই বায়না যত শোনায় নাতি - পতি
মায়ের জন্য নেই অবকাশ সময় এক রত্তি ।
চোখের আলো চলে গেছে স্বামীর শ্মশানেই
দড়ি বাধা চশমা একটা দশ বছর ধরেই ।
কফের অসুদ কেউ আনেনা খক্ খক্ কাশে
তাইনা দেখে ছেলে পুলে ঘৃনায় দুরে বসে ।
বড় সাধের আলমারীতে ভাজ করা কাপর চোপর
ওই'য়ে খেল কেউ জানেনা কেউ রাখেনা খবর ।
সবশেষে ভেবে চিন্তে ঠিক করল কালীর মা
আর নয় ধৈর্য্য, সইব না আর যাতনা ।
তাইতো এখন,
কিষাণ গঞ্জের কালীর মা , দ্বারে দ্বারে ভিখ্ মাগে
ভীষন ব্যস্ত কালী চরন, সব কাজে সবার আগে ;
লক্ষ কোটির হিসেব গুনে, বিলেত থেকে গাড়ী আনে
মায়ের মনন না জেনে মাকেই দোষে অসন্মানে ।
কালীর মা ভিক্ষা করে দু মুঠো খায় পেট ভরে
সুখের ঘরে বসত করে দিন কাটায় স্মৃতির নীরে ।।