সকালের চানটা সেরে তারাতারি রান্না করে
দুমুঠো ভাত মুখে পুরে আর কটা ভাত বাটিতে...
দে দৌড় সোজা সময়ের মাপে চলা সি,এন,জি বাসটা...
আপিসে পৌছেই মেয়েকে ফোন লাগায়
"মা তুর খাওয়া হয়েছে ? এবার তবে স্কুলে যা"।
এটেন্ডেন্সের খাতায় সইটা দিয়ে চেয়ারে গা এলিয়ে
ভেজা চুলের খোপাটা খুলে দিয়ে দামী শ্যাম্পুর গন্ধ ছড়িয়ে
অফিস ঘরের ঘুলঘুলিতে চড়াই পাখির বাসায় দেখে সদ্য ফোটা বাচ্চাটা......
সাইলেন্ট করে রাখা মোবাইলের ভাইব্রেশান পেয়ে রিসিভ করে
"হ্যাঁগো তুমি বেড়োনোর সময় গ্যাসের পাশ বইটা নিয়েছ তো !"
তার পর কিছুক্ষন নীরব মাথা নেরে হুঁ হুঁ করে...
টেবিলে ফেলে যাওয়া গতকালের ফাইলটা খোলে আঙ্গুলের উষ্ণতায় তপ্ত কলমের প্রান্ত চলে যায় দাঁতে ।
আজকের দিনটা বুজি ভালোয় ভালোয় আসেনি
মাথা গরম বসের তিক্ত অভিজ্ঞতার তিতিবিরক্ত ধমকানি
লাঞ্চের সময়টা কেটে গেল অজান্তে......বাটিতে ভাত
হজম হয়েছে, শূণ্য উদর জ্বলে চা'য়ের নিকোটিনে ।
পাঁচটা কূড়ি বেজে গেছে তবু ঝরছে বৃষ্টি রিম্ ঝিম্
দশ মিনিট আগেই চলে গেছে সি,এন,জি বাসটা
আজকের বাজেট কাটতি, পেটে ব্যাথা চিন্ চিন্ ,
সুপারিনটেন্ডেন্ট এর ফিয়েট গাড়ীটা তুলে নিল ভাগ্যিস
মখমলের গদিতে বাতানুকুল বাতাসে মনটা এখন বেশ লাগছে ফ্রেশ,
পঞ্চাশ কিলোমিটার দুরত্বের সময় ব্যবধানেও
মধুমাসের বৃষ্টিটা থামে নি গলির মাথার ট্ং দোকানটায় ;
ব্যাগের ছাতা ব্যর্থ হবে জেনেই, ছাতার পাশে হাত গলিয়ে
মোবাইলের স্ক্রীনে সময়টা দেখে মেয়েকে আবার ধরে
"মা তুই এসেছিস্ ! একা ! ভয় পাস্ না , আমি তো এসেই গেছি ,
তুর বাবা ফোন করেছে ?"
এক পশলা খাড়া বৃষ্টি উত্তুড়ে হাওয়ায় ভর করে
ভিজিয়ে দিয়ে গেল হালকা শিফনের শাড়িটা......
অতঃপর ঘাঢ় অন্ধকারে ছাতা মেলে প্রকৃতির কাছে নিজেকে শপে দিয়ে শুরু হল পথ চলা,
আচমকা ঝড়ো হাওয়া আটকে দিচ্ছে পদক্ষেপের মাত্রা ;
একটা মিষ্টি কন্ঠের আওয়াজ "হৈমন্তী..." যেন সম্বিৎ ফেরায়
মেয়ের শঙ্কাচ্ছন্ন দৃঢ় প্রত্যয়ের পথ চলায় ।
"ওহ্, সুজিত দা ! দেখুন না, কেমন করেছে আবহাওয়াটা "
বৃষ্টির ঝাপটানিতে আরো কিছুক্ষন কিছু কথাবার্তা
তার পর বাইকে উঠে বসা, মাথা নামিয়ে সুজিত দা'র পিঠে
নিজেকে লুকিয়ে রেখে বৃষ্টির সাথে লুকোচুরি খেলা ;
তারও পরে বাড়ান্দার গ্রীলে দাড়িয়ে থাকা মেয়েকে মনে করে
সুজিত দা'র আরেকটু কাছে যাওয়া এবং
মেয়ের গানের স্কুলের সি,ডি টা নিতে
সুজিত দা'র ঘরে যাওয়া ।
ঘর থেকে হৈমন্তী বেড়োল যখন আকাশে নেই মেঘের ঘনঘটা
পা গুলো তার আটকে দিচ্ছে সারাদিনের উপুষি পেটের ব্যথাটা,
ঘরে ফিরে মেয়েকে বুকে তোলে লয়ে কিছুটা আদর সোহাগ
কিছুটা একা চলার উপদেশ দিয়ে , মুছে ভেজা শাড়িটার
দাগ
ক্লান্ত শরীর বিছানায় এলায় , স্বামীকে চাইনিজ আনার করে বায়না
চাইনিজের মশলার গন্ধে ঘর যখন ম্ ম্ করে
ঘড়িতে রাত বারটা কি একটা
স্বামীর সোহাগী বায়না এড়ায় ;  দেহে যে তার সুজিত দা'র গন্ধটা ।