বেলা প্রায় দশটা বাজে বাজে
এখনও দু একজন আসছে মাঝে মাঝে
কেউ বাইক থেকে আবার একজন গাড়ী থেকে
জবাবে নঞর্থক ভঙ্গি দেখে ফিরে গেছে অনেক আগে ;
বাসন্তী সকালের মোলায়েম রোদ ক্রমশঃ তেজী লাগে
অথচ ঘরে ফিরে যাবার জো নেই তার
কেননা সেই ভোরে দুমুঠো রেঁধে নুন চা খেতে খেতে বলে এসেছে
"আজকে কাজ পাবো, চাল অসুধ সব আনবো" ।
সূর্যের তাপ যত বাড়ছে, রাস্তায় যান যত বাড়ছে
মানুষের ব্যস্ততার লাগামে টান পরছে ;
বছর দশেকের বৈবাহিক জীবনে শেষের দুবছর
কেড়ে নিয়ে গেছে সব জেল্লা জৌলুস চেহারার,
তবুও শরীরটা বড় বাধা হয়ে আছে তার
নিত্য নৈমিত্তিক অভাব-তাড়িত হার না মানা স্বপ্নিল মনের কাছে
"একদিন স্বামী সুস্থ হবে, ছেলেটা নিশ্চয় মানুষ হবে" ।
পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্বামীকে ঘরে রেখে শখ আহ্লাদে তালা মেরে
বাঁচার তাগিদে নেমে গেছে যে কাজে অনভ্যস্ত,
নিয়ম করে রোজ সকাল আটটায় এই বটতলার মোড়ে
তারপর দিনের জন্য চুক্তি করে কোন দিন কাজ পায় কোন দিন পায় না ;
ইদানীং রাজমিস্ত্রি কাজে কিছুটা ভাটা পরেছে কিংবা
তাকে আর মিস্ত্রীরা নেয় না কেননা
ওরা চায়, দক্ষ শ্রমিক কিংবা দেহের বিনোদন ;
দেহ যে আছে তার তবে নেই আয়োজন ।
রোজকার যাতনা শিখিয়েছে মুখ চেনা
কিন্তু আজকে বেলা প্রায় দশটা বাজে বাজে
সেরকম সভ্য কোন মুখ যে খোঁজে পেলনা (!)
গাড়ী-ওয়ালা এখনো পার্কিংএ দাড়িয়ে আছে
রহিমার কানে বাজে "আজকে কাজ পাবো, চাল অসুধ সব আনবো......যাবি আমার বাড়ির কাজে, কেউ নেই আজ ঘরে ";
সূর্যের রশ্মিগুলো ক্রমশ আবছা হচ্ছে শহরের ধুলোবালিতে ,
বেলা প্রায় দশটা বাজে বাজে.....।।