নিঃশব্দতার একটা শব্দ আছে,
কান্নার আছে এক অদ্ভুত ভাষা,
চমৎকার যাদু আছে হাসিতে,
জীবনের নিঃশব্দতার ছবিতে,
হয়তো কারো ছবি আঁকা থাকে।


পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে চলা,
জীবনের উত্থান-পতনের নিরলস যুদ্ধ,
চাওয়া আর না পাওয়ার বেদনা,
হাসি আর কান্নার মাঝের সময়ে,
নিঃশব্দতা জীবন রচনা করে।


মরুভুমির উত্তপ্ত ধুপে ফুল ফোটে,
হিমশীতল বরফের মাঝেও জীবন চলে,
চলে অস্তিত্বের খোঁজ মহাশূণ্যে,
সৃষ্টির রহস্য ভেদের আবিষ্কার,
উল্লাসিত জীবনের আত্মচিৎকার।


আবিষ্কৃত হয়নি মানুষ নামক প্রানের নিঃশব্দতার শব্দ,
আবিষ্কৃত হয়নি চোখর জলের ভাষা,
আবিষ্কৃত হয়নি হাসির যাদুর রহস্য,
হাসি আর কান্না জীবনের নিরুপায় দুটি সত্তা,
চাওয়া আর না পাওয়ার মাঝে ওরা যেন ছুটে বেড়ায়।


চোখের পাপড়িতে জমে থাকা জল,
ঠোটের কোনে এক চিলতে হাসি,
বুকের মাঝে সাগরের ঢেউ,
নাকি রংধনুর সাত রঙে রাঙ্গানো আলো,
কিংবা বুকের ভেতর জমাট বাধা বরফ
নাকি দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন,
তা কেউ আবিষ্কার করতে পারেনি।


মানুষ নামক এই অদ্ভুত প্রান।
লক্ষ কোটি আবিষ্কার,
আধুনিক সভ্যতার উত্থান,
জীবনে গতিতে যান্ত্রিকতা,
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে জীবন রচনা।


মনুষ্যত্বের অস্তিত্বহীন দানব,
বিবেকহীন সমাজ, স্বার্থময় পৃথিবী
আমাকে মানুষ করেনি,
অমানুষ বানিয়েছে।


কারো কান্না আমাকে বিচলিত করে না,
অকালে ঝরে যাওয়া কারো রক্ত,
আমার ধমনীতে উত্তাপ সৃষ্টি করে না,
কারো আর্ত-চিৎকার আমার কানকে স্পর্শ করে না
আমার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা,
আমি কিছু দেখতে পারি না।


আমি মানুষ নামের সেই অমানুষ,
যার ভেতরে প্রতিবাদের ভাষা জন্মায় না।
আমার পেটে খিদা নেই তবু আমি খেতে ভালোবাসি
আমার জীবনে আর কিছু পাওয়ার নেই
তবু আমি আরো পেতে চাই।


আমি হিংস্র, আমি লোভী,
জীবনের অস্তিত্বের খোঁজে, আবিষ্কারের নেশায়
আমি নিজের বিবেককে ছিন্ন ভিন্ন করি,
আমি ঐ সিংহাসেনে বসতে চাই,
যেখানে মনুষ্যত্বের কোন অস্তিত্ব নেই,
আমি মানুষ নামের অমানুষ,
মনুষ্যত্বের  অস্তিত্বহীন একটি দানব মাত্র।