কমলা একা একাই সেদিন
আসিলো বাপের বাড়ি।
কোন হাসি নাই, কথা নাই
মুখখানা যেন এক কালো হাঁড়ি।


তোর দু:খটা কি? বাবা কহিলো।


ঐ বাড়িতে আমার মন বসে না
স্বামি ভালোবাসে না
দজ্জাল বুড়ি দেয় যন্ত্রনা
সাথে আছে ননদের কুমন্ত্রনা।
কুটনা বুড়ির আমি মরণ চাই
ওর মত ডাইনী একটাও নাই।


পরদিন প্রাতে কহিলো বাবা
মা রে তোর সুখই আমার সুখ.
বুড়ির অজান্তে সাবধানে
এই মন্ত্র পড়া তাবিজ খানা
রাখবি উহার বালিশের ভিতর।
বুড়ি ঠিক মরিবে চার হপ্তা পর।
আর হ্যাঁ।
বুড়ি মরার আগে তোর কাছে
পায় জানি একটু সুব্যবহার।
না হলে তাবিজ কাজ করবে না
এই কথা মনে রাখা দরকার।
তাহার পর জামাই লইয়া নিশ্চিন্তে
হইবে তোর সুখের সংসার।


কমলা খুশিমনে ঘরে ফিরিয়া
কথা মত শুরু করিলো কাজ।
বুড়ি তাহারে ইচ্ছামত গালমন্দ করে
কমলা করে না একটুও আওয়াজ।
বুড়ি তাহাকে দিলে মাছের কাঁটা
কমলা মালিশ করিয়া দেয় তাহার পাঁ টা।
বুড়ি যদিবা মারিতে আসে ঝাঁটা
কমলা তবু বাড়াইয়া দেয় তাঁহাকে
সযত্নে সাজানো পানের বাটা।


বুড়ি মনে মনে বলে,
সহসা এমন কোমল ব্যবহার!
নিশ্চয় আছে কোন কুমতলব তার!
তথাপি তাহারও  মানুষের মন
গলিতে লাগিলো ধীরে
একটু একটু অনুশোচনা গোপনে
পাইয়া বসিলো তারে।


তিন হপ্তা না হইতে পার
কমলা আসিয়া হাজির বাপের বাড়ি
বাবা, এই তাবিজের কালো যাদু
বন্ধ করিতে হইবে এক্ষুনি। তাড়াতাড়ি।
এই বুড়ি মরিয়া গেলে
ঐ বাড়িতে টিকিবে না আমার মন
তাহার মত মানুষই হয় না
বুঝি নাই আগে এতই সে সজ্জন!


বাবা হাসিয়া কহিলেন,
তুই যে আসিয়া এই কথা বলবি
সে আমি আগে হইতে জানি।
তাবিজ আসলে মিথ্যা
তাবিজে কিছু ছিল না রে!
বুড়ির ব্যবহার পাল্টাইয়াছে
শুধু তোর ভালো ব্যবহারে।


( কবিতাটির প্রেরণা একটি অনলাইন ভিত্তিক
এমেচার ড্রামা।)