চুপচাপ শুয়ে থাকা লোকটা
নাম তার ভোলা।
রুগ্ন শরীর জীর্ণ চেহারা
গাল দুটো ফোলা।
নেই কোন নড়া চড়া
কিছুতে দেয় না সাড়া
অনুভূতিহীন দৃষ্টিতে
নেই কোন তাড়া
রক্তশূন্য চোখ
থাকে আধ খোলা।


কি যে হোল লোকটার
এলো কত ডাক্তার
এই টেষ্ট সেই টেষ্ট সব করে
হলো না অসুখের
ঠিক কারনটা বলা।
ডাক্তার বললেন
ঔষধে হবে না
ওর চাই কড়া কিছু পথ্য
দুই বেলা খেতে থাক
মুড়ি আর ছোলা।


স্বজনেরা ফেলে কাজ
ডাকলো কবিরাজ
নাড়ি টিপে চোখ দেখে
কবিরাজ বললো, অসুখ সারবে
খেতে হবে জাফরান
সাথে চন্দন বাটা আর আস্ত লং 
সাড়ে তিন তোলা।


এই করে সাত দিন
মেপে মেপে খেয়েও
পারা গেল না অসুখটা
একটুও সারিয়ে তোলা।


এবারে আসলো বদ্য
দিলো ইয়া বড় তালিকা
সেই সাথে ঔষধের
লম্বা চওড়া  ফর্দ।
তথাপি ভোলা আছে চুপ চাপ
ছোঁয় না তাকে
জীবনের কোন উত্তাপ
মুখে তার বাঁকা হাসি
স্বজনের হাসি কান্না অভিমান
জীবনের উদ্দাম এই নাচ গান
কোন কিছুতে যেন
তার মন দেয় না আর দোলা।


সে যেন হয়ে গেছে যান্ত্রিক!
কে যেন বললো তাই
ডেকে আনো তান্ত্রিক
মন্ত্র পড়ে বুকে দাও ফু
এবারে  এই রোগ নিশ্চয়
হয়ে যাবে কাবু
আগের মত দাঁড়াবে, হাসবে
গাইবে আগের সেই ভোলা।


না হলে ডেকে আনো ওঝা
জীন ভুতে ধরলে
সেও যাবে বোঝা।
ঝাড়ু মেরে তাড়াবো ভুত
বোতলে ভরবো জীন
উঠে ঠিক দাঁড়াবেই
আমাদের ভোলা।


এত কিছু হয়ে যায়
সবাই উৎকন্ঠায়
কিছু কি বোঝে না
হাবা গোবা ভোলা?
অসুখের কি কারন
বলা কি তার বারন
না কি সে আসলেই
বোবা কিংবা কালা?


( এখানে ভোলা বলতে কোন ব্যক্তিকে বুঝানো হয় নি। ধরে নেয়া যায় এটা আমাদের রুগ্ন সমাজেরই এক চিত্র।)