সকাল, সন্ধ্যে ফুঁপিয়ে কাঁদে আকাশ
আকাশের দুঃখে ঘাসেরা সতেজ
আমি,
অনাবৃত হয়ে আকাশের নিচে
আকাশের কান্না ছোঁয়নি আমায়...।।


চঞ্চল, উচ্ছ্বল বয়ে যায় বাতাস
বাতাসের দোলায় ছন্দিত পরিবেশ
আমি,
খোলা ময়দানে, তবু গহীন অভ্যন্তরে
বাতাসের ঝাঁপটা স্পর্শেনি আমায়...।।


কলকল শব্দে বয়ে যায় নদী
কবি শোনে সেই তান নিরবধি
আমি,
নদীর বুকে ডিঙ্গি ভাসিয়েছি
কলতান মুগ্ধ করেনি আমায়...।।


সাগর ডেকে যায় বীরের মত
বীরত্ব দেখতে দর্শক শত
আমি,
হাঁটুজলে নেমে হেঁটেছি কিছুটা
সাগর জয় করেনি আমায়...।।


পাহাড় ভুতলে দাঁড়িয়ে সগর্বে
সব ছাড়িয়ে শির তার ঊর্ধ্বে
আমি,
চূড়ায় দাঁড়িয়ে দেখেছি শায়িত পৃথিবী
উচ্চতা ভীত করেনি আমায়...।।


ধু ধু মরুর খাঁ খাঁ রোদ
কেড়ে নেয় কত বেদুইনের বোধ
আমি,
শুয়েছি সে তপ্ত বালির উপর
উত্তপ্ত বালি তপ্ত করেনি আমায়...।।


ঝি ঝি ডাকা গহীন অরণ্য
কিছু প্রাণী নাকি হিংস্রতায় বন্য
আমি,
চলেছি আদুল পায়ে সেখানে
শঙ্কা তবু ছোঁয়নি আমায়...।।


হিমবাহ বহে নাকি ঐ হিমালয়ে
প্রচণ্ড সাহসীরাই যায় তার আলয়ে
আমি,
ছোট পায়ে উঠেছিলাম অনেকটা উপরে
সাহসীকতা তবু পায়নি আমায়...।।


সবুজ মাঠের শ্যামল প্রকৃতি
জাগায় মনেতে ধরণী প্রীতি
আমি,
সেই মাঠের আল ধরে গিয়েছি
কোমলতা তবু চিনেনি আমায়।


সোনালি ফসলের মাঠ ঝলমল হাসে
চোখে স্বপ্ন, কৃষকের বুক ভরা আশে
আমি,
দেখেছি সে ফসলে কৃষকের গোলা ভরতে
আনন্দ তবু মাতায়নি আমায়...।।


দীর্ঘ দশ মাসের প্রতীক্ষার পর
সকলের সেকি উল্লাস শিশুটি জন্মানোর
আমি,
সেই নিষ্পাপ আগন্তুককে নিয়েছি কোলে
উল্লাস উল্লসিত করেনি আমায়।


অকৃতকার্য এক প্রেয়সী বধুকে দেখেছি
অকালে হেরে আমায় ছেড়ে চলে গেছে ওপারে
আমি,
খুব ভয় পেয়েছি, কষ্ট পেয়েছি, পাথর হয়ে গেছি
এই মৃত্যুই আমা হতে কেড়ে নিয়েছে তোমায়...।।



সস্তাপুর, নারায়ণগঞ্জ।
০৭ পৌষ, ১৪২০ বাংলা। ২১ ডিসেম্বর, ২০১৩ ঈসায়ী।