বড়ই স্বার্থপর আমি
নিজেকেই নিয়ে ব্যস্ত সারাক্ষণ,
যে প্রতিশ্রুতিতে করেছি দস্তখত
ক্ষণিক কি স্মরণে রেখেছে মন?


মনে আছে?- সেই প্রথম রাতে, আমার সম্মুখে
তুমি লজ্জাবতী, লজ্জাবনত মুখে,
লজ্জা তবু ছোয়নি আমার ভালবাসাহীন বুকে
অনায়াসে চোখ, রেখেছি তোমার চোখে।


কত ভোরে ঘুম ভেঙ্গে পাশে ছিলে না তুমি
কষ্ট নয়, বরং ভালই লাগতো আমার,
ভালবাসার ঘাম ধুয়ে সাফ, পুনঃপবিত্র তুমি
তবুও জাগত ইচ্ছা পেতে বুকেতে আবার।


নাশতার টেবিলে পাউরুটি, কলা আর মাখনের সমাহার
খেতে খেতে গোলাপি ঠোঁটে মাখন আঁকত বাহার,
ভালবাসা কই জাগত না মনে, লোভী জিবটা
চাইত সেই মাখনের স্বাদটা পাবার।


কাঠফাটা রোদে, দাবদাহের দুপুরে
ক্লান্তিতে স্থির, পিপাসায় অস্থির দেহ,
তোমার দেয়া একগ্লাস পানিতে নিবারিত
তেমনি সাধারণ ছিল, যেমনটি দিলে অন্য কেহ।
মিষ্টি লাগেনি, পানি ছিল পানির মতই
পিপাসিত বুকটা, এই পানিটাই চাচ্ছিল কতই,
ভালবাসা জাগেনি তখনও তোমার জন্য আমার
তবু পান করব দিবে তুমি যতই।


বিকেলের পরিবেশে বারান্দায় খোলা চুলে তুমি
উপরে খোলা আকাশ, বইছে বায়ু, সামনে বিস্তৃত খোলা ভুমি,
বধির কান, অন্ধ চোখ, বদ্ধ বুক অনুভবেনি নীরব আহ্বান,
পুরু ঠোঁটদুটো অবাধ্য, পেছন থেকে দিয়েছে অধর চুমি।
ভালবাসাহীন, উষ্ণতাহীন, প্রেমহীন পুরু ঠোঁটের ছোঁয়া
অস্ফুটে তবু ‘ভালবাসি’ তোমার মুখে শুনি,
লোমশ হাত চেপে আছে পেলব নাভিমূলে
নির্বোধ আমি, আমার চেহারায় তোমার ভালবাসা গুনি।


সন্ধ্যার আকাশে শুকতারা হাসে ঐ
একদৃষ্টে তাকিয়ে ভাবনার অতলে হারাই,
সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি, চিন্তা ঘুরপাক মনে
চেতনার চাতালে ‘ভালবাসা’ জিনিসটা কই?
তুমি একপাশে গা’টি ঘেঁসে কখন দাঁড়াও, বিস্মিত হই অবাক-
ভালবাসা! মুল্যবান বস্তুটা নাইবা পেলাম, ভালটা তবু থাক,
তুমি আমার পাশে এখন, চাই শুধু তোমায়
পৃথিবীর সমস্ত ভালবাসা বিনিময়ে ‘কবি’রা নিয়ে যাক।


ফিরে আসে রাত, যেমনি এসেছিল আগে
লাজুক ছিলে তুমি সে দিন, আজ আমার লজ্জা লাগে;
ঘরে সেদিন ছিলনা কেউ, আজও নাই কেহ
সেদিন আমি রেখে ছিলাম, আজ তুমি রাখলে আমার বুকেতে দেহ।
সেদিন দুচোখ তোমার বন্ধ ছিল, আজ আমি খুলতে পারি না-
তুমি চাও ভালবাসা, ভালবাসতে আমি জানি না।


সস্তাপুর, নারায়ণগঞ্জ।
১১ মাঘ, ১৪২০ বাংলা। ২৪ জানুয়ারি, ২০১৪ ঈসায়ী।