‘আমি হবো সকাল বেলার পাখি’
পড়ে ছাত্র, তবু ভোরের সূর্য যায়নি কভু দেখি,
‘সূর্য্যি মামা জাগার আগে উঠবো আমি জেগে’
এই কথাটা বল যদি, সে তো যাবে রেগে।
‘আলস্য দোষের আকর’ ছোট বেলা হতেই মুখস্ত কড়া,
বাক্য হতে নেয়নি শিক্ষা, অলসতায় জীবনটা ভরা।
পরীক্ষার হলে রচনা লিখে ‘বড় হয়ে হবো আমি ডাক্তার’
ধনী হতে নাম মাত্র ফী, ফ্রি সেবাটা গরীবের দরকার।
সেই ছাত্রই একদা ডাক্তার হয়েছে যেই
ধনী-গরীবে হাজার টাকা ফী, শিক্ষার কথা আরতো মনে নেই।
উপাচার্যের ঘুষের প্রতিবাদে ছাত্রজীবনে করেছে কত লড়াই
উপ-কমিশনার হয়ে আজ সে নিজেই করছে ঘুষের বড়াই।
‘যৌতুক একটি সামাজিক বিরোধ’ পড়েছে কত সে
তারই দাবী ষোলআনা যৌতুক না দিলে হবে না এই বিয়ে।
‘পিতা মাতা পরম সম্পদ’ ওয়াদা ছিল করবে না তাদের পর
সেই ছেলেই বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাল তাদের, দখল নিল ঘর।
‘কোন পেশাই ছোট নয়’ শিক্ষা ছিল যার
শিল্পপতি হয়ে আজ মজুর-শ্রমিকে অকথ্য গালাগালি আজ তার।


‘শিক্ষা মানুষকে মহান করে’ আছে সকলের জানা
একটু তলিয়ে দেখোরে ভাই খাতা কলমের বাইরে সে শিক্ষা আছে কিনা?
রাতে ছেলেকে পড়িয়েছ ‘সূর্য্যি মামা জাগার আগে উঠবো আমি জেগে’
উঠালেনা তাকে, সূর্যটা জাগার আগে, ঐ বিদ্যা যাবে ভেগে।
অলসতা ভালো নয় বলেছ তবু তার অলসতায় সাড়া দিয়ে
বিদ্যালয়ে না যাবার আবদার রেখেছ মাতৃস্নেহ আর পিতৃ ভালোবাসা দিয়ে।
অলসতার শিক্ষা তুমিই দিচ্ছ, যতই পড়াও ‘আলস্য দোষের আকর’
এই ছেলেই কুঁড়ে হবে, নষ্ট হয়েছে যার শিকড়।
“খোকন সাহেব বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিল” তোমার সন্তান যদি দেয় এমনি কোন খবর,
বলো খারাপ হয়েছে, উচিৎ হয়নি বাবা-মাকে করে দেয়া পর।
বলোনা এমন ‘যাক, এখন একটু আরামে রবে খোকন’
থেকো তৈরি তোমার সন্তান তোমাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠায় না জানি কখন।


আজতো বিদ্যাধরী তাকেই বলে যে কলমে সম্মান-স্নাতক ধারী,
এ বিদ্যায় কোন লাভ নেই যদি না গেল জীবনে রপ্ত করি।
নেই বাঁধা, হও বিদ্যান বড় বড় পদকে তোমার পদবী করুক সকলে ব্যাখ্যা,
জীবনেও তার থাকুক প্রয়োগ, তা হয় যেন ‘জীবনমুখী শিক্ষা’।



সস্তাপুর, নারায়ণগঞ্জ।
০২ বৈশাখ, ১৪২১ বাংলা। ১৫ এপ্রিল, ২০১৪ ঈসায়ী।