অধম পাঠক


জাহিদ হোসেন রনজু
-----------------------------------------®


মহাভারত অশুদ্ধ হবে না
যদি বলি-
আমি অনেক কবিতাই বুঝি না, বুঝতে পারি না।
আর-
বুঝতে পারি না যখন,
তখন-
জীবনানন্দ দাশের মতন-
'সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে........,
অথবা
'বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে'
'আমি ক্লান্ত প্রাণ এক' ঘুরে আসি,
"শ্রাবস্তীর কারুকার্য" অন্বেষণে,
খুঁজে বেড়াই কবিতার মানে।


অথবা
কোন বিদগ্ধ অনুবাদকের মতন
অভিধানের পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে
কবিতাটির প্রতিটি শব্দের অর্থ, সমার্থক শব্দ খুঁজে খুঁজে বের করি।
কিন্তু
ব্যর্থ হয় 'বিদর্ভ নগরে' যাওয়া..
'অতিদূর সমুদ্রের’পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা',
তার মতন আমিও দিশা হারাই,
তবুও 'সবুজ ঘাসের দেশ'
খুঁজে পাই না 'দারুচিনি দ্বীপের ভিতর'।


তাই
'সমস্ত দিনের শেষে"
কবিতাটি আমার কাছে তেমনি থাকে; দুর্ভেদ্য ; দুর্গম
আমার দুচোখে, মগজে-
'শিশিরের শব্দের মত সন্ধ্যা আসে'।


পরিশেষে অগত্যা থাকে শুধু আমার
                   'মুখোমুখি বসিবার
নাটোরের বনলতা সেন।'
'ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে'
আমার ব্যর্থতা লুকিয়ে আমি
তাকে ডেকে আনি
পড়ে শোনাই কবিতাখানি
বলি-
এবার বলুন কি বুঝলেন কবিতার মানে?
ডানে-বামে দুপাশে মাথাটি নেড়ে,
বলেন সবিনয় করজোড়ে
"পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে
নাটোরের বনলতা সেন"-
"এত দিন কোথায় ছিলেন?"
আমিও তো খুঁজে ফিরি এ কবিতার মানে।


বুঝলাম সে আমারই মতন
অথবা আমি তারই মতন অধম পাঠক কোন।


না হয় কবিতাগুলো
ইনকা সভ্যতা বা সিন্ধু সভ্যতার মতন
অথবা
তারও আগের প্রস্তর বা তাম্র যুগের
ধূসর শিলালিপিতে লেখা কোন মহার্ঘ্য সম্পদ;


যার ভাষা জানা নেই আমার; হয়তো অনেকের।


------------------------------------------
১২ জুন, ২০১৮, মিরপুর, ঢাকা।