জসীম উদ্দীনের "কবর" পাঠে-তে নয়নে অশ্রু ঝরে
ক্ষণে ক্ষণে হায় হৃদয়ে গুমরে বিজ্বলী চমকি করে।


খুব প্রিয় ছিলো আমারও তো এক হতভাগ্য পিতা
অসময়ে হায় চলে গেলাে তায়, কি ছিলো শেষ কথা!
হয় নাই শুনা দিনমান গুনা আসবে না ফিরে আর
কেমন আছেন আঁধার তিমিরে প্রিয় বাবাগো আমার।
ছেলে মেয়ে আর প্রিয়তমা তার সকল স্বজন ফেলে
কত না যতনে আমারই রতনে ঐ পাড়ে গেল চলে!
দিন চলে যায় রাত্রি বিলায় আসে না ফিরে সে ভোর
আঁড়িয়াল খা-র অতলে বিলীন আমার বাবার কবর।


শুন বাপ জান আলী মোর প্রাণ তোমার দাদার কথা
কত না স্বপন বুনেছিলেন ওই হৃদয়ের প্রীতি লতা,
তিন জনা তার সোনার মানিক এই বুঝি বড় হলো
দাদীর কাছেতে করিতো গল্প চোখ তার ছলছল।
চাচার আদরে স্নেহের চাদরে শহরে মানুষ হবে
খালার যতনে তোমার রতনে সকলে সাহেব কবে।
আর কটা দিন অপেক্ষার বীণ এই সবে বড় হলো
চাকুরীটা হায় পাবে নিশ্চয় অভাব শিকেয় তোলো।


তোমার ফুপী দুইজনা ছিলো তার হৃদয়ের পাখি
ছোটজনা তার মন-মনিহার করিতেন ডাকাডাকি।
পাগলীর মা বলিতেন আদরে পরম মমতা মাখি
বাবা বলে যতই ডাকি আজি দেখে না মদির আঁখি।
ছোট্ট বেলায় বাবার আযান শুনে উঠতাম জেগে
ফজর সলাত জায়নামাজে আদায়ের ই আবেগে।
কত না মধুর ছিলো তাহার কোরআন পাঠের ধ্বনি
এখনও আমার কানে বাজে বাপ কেঁপে ওঠে ধমনী।


তোমার দাদী জায়নামাজে তসবিহ জপে রােজ
সারি সারি এ অট্টালিকায় কে নেয় কার খোঁজ!
চলছে গাড়ি চলছে নদী এ জীবন প্রবাহ চাকা
কত না স্বপ্নে ধুলায় ধুসর নব আল্পনা আঁকা!
এই বুঝি হলো সুবেহ সাদিক মুয়াজ্জীনের ডাক
'ঘুমের চেয়ে সলাত উত্তম' মধু-ঘুম পড়ে থাক।
উঠো বাপ জান উঠো আম্মা সলাত আদায় করো
এখনই সময় আলসেমি ছেড়ে সত্যের পথ ধরো।


ওহে আল্লাহ, হে রহীম রহমান তুমিই অন্তর্যামী
তোমার তরে করি প্রার্থনা অপরাধী এই আসামী।
নানা-দাদা বাবা উপহার যত দিয়েছিলে তুমি মোরে
অনাথ-এতিম করে আবার নিলে ঐ আঁধার কবরে!
পাপ-তাপ যত করে দিয়ে ক্ষমা চাইগো সবার তরে
বেহেস্তের দ্বার খুলে দিয়ো তুমি তাদের কবর পরে।
আমারও মরণ কালে খোদা এই জবানে ইমান চাই
পরকালে ও বাবা-মা কে যেন আপন করিয়া পাই।


"রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানী সগিরা"।


স্থান: সাভার, ঢাকা।
তারিখ: ১০ কার্তিক ১৪২৯ বঙ্গাব্দ/২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরি/২৬ অক্টােবর ২০২২ খ্রিস্টাব্দ।