একলা ঘরে মনে পরে হারান সেই দিন,
স্মৃতি কাতর মনটা আমার হয় যে উদাসীন।
সোনালী সেই মধুর সময় কোথায় গেল চলে,
এখনও ভোরে রবি ওঠে সাঁঝে অস্তাচলে।


শীতের মাসে কাঁচা রসে হাড় কাঁপান সুখ,
আউত্তা পোহান একটু গরম উষ্ণতা উন্মুখ।
ভাটবালীর বাওর জলে মাছ ধরার মিছিলে,
খলশে পুঁটি বাইল্লা বোয়াল বন্ধুরা সব মিলে।
নদীর জলে ডুব সাতারে লুকোচুরি খেলা,
ভাবিনি সে আনন্দেতে বয়ে যায় কত বেলা।
মায়ের সোহাগ শাসন ভুলে স্কুল ফাঁকি দিয়ে,
সখিগণে খেলায় মাতি "আজ পুতুলের বিয়ে"।
মাঠের পরে নীল সুদূরে ঈদের চাঁদ দেখা,
কে দেখেছে সবার আগে স্মৃতির মোহরেখা।
নতুন জামা ঈদ জামাতে সবার কোলাকুলি,
মাঠের পরে খেলতে যেতাম চব্বুই ডাংগুলি।
জমিতে বসে খড় আগুনে সিদ্ধ কলাইর স্বাদ,
অট্টালিকায় সেই আয়োজন এখন সে সব বাদ।


হাই স্কুলের বারান্দাতে মধুর সুখ স্মৃতি,
জীবন রণের আমন্ত্রণে দিলো কখন ইতি!
শিক্ষা গুরু আদর্শবান আনন্দ পাঠশালা,
মনের ঘরে উঁকি মারে পরীর প্রেমমালা।
সকাল দুপুর কেমন যেন তার-ই হাতছানি,
এক পলকের একটু হাসি নিতো কাছে টানি।
পাঠের নেশায় লাইব্রেরীতে বন্ধু সুজন সবে,
দশ্যূ বনহুর নয় কবিতা প্রেমের অনুভবে।
বিকাল হলে খেলতে যেতাম মুজগুন্নীর মাঠে,
সন্ধ্যা বাতি জ্বলার সাথেই মগ্ন শ্রেণীর পাঠে।
দশ টাকাতে পাঁচ জনাতে দশটি পুরি ভাজা,
আয়েশ করে নিতাম খেয়ে ছিলাম মনের রাজা।
সবাই মিলে সাঁঝ বেলাতে পড়ায় মাঝে ডুব,
ঘর গমগম পড়ার সুরে রাস্তারা সব চুপ।


হারিয়ে গেল মধুর সময় এখন আমি একা,
পিছন ফিরে যতই খুঁজি যায়না তারে দেখা।
আবার যদি পেতাম ফিরে হারান সেই ক্ষণ,
ভাঙ্গা স্বপ্ন দিতাম জোড়া, চায় সদা এ মন।


স্থান: সাভার, ঢাকা।
তারিখ: ২৩ মাঘ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ/১১ জমাদিউস সানি ১৪৪১ হিজরি/০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ খ্রিস্টাব্দ।