আমি ছিলাম তখন দশম শ্রেণির ছাত্র
গাঁয়ের জেলা শহর ঘেষা বলে কথা।
ঢাকা শহরে সদ্য আসা নব্বই দশকে
বাড়ি হতে রাগ করে গ্রাম ছেড়েছি।


তেমনটা চেনা জানাও ছিল না আমার
হঠাৎ একদিন গেলাম ঢাকা কাওরান
বাজারের পার্শ্বে অবস্থিত খুব সুন্দর এক
অনন্য শোভা ভরা ফাইভস্টার হোটেল।


দৃষ্টি নন্দন অপরূপ মননশীল রূচি ভরা
দূর হতে যেমন সৌন্দার্য শোভা দেখা।
তেমনটি ভিতর গেলে যেন মুগ্ধতা ছড়ায়
ব্যাকূল মনটি উতলা চঞ্চলা প্রাণটান।


পকেটে ছিল না টাকা তেমনটা মনচঞ্চলা
কিছুটা সংকোচবোধ মনের আশা কথা।
এক পা পিছু আরেক পা এগিয়ে চলতেই
হোটেল প্রহরা নিরাপত্তা রক্ষী কি চাই??


বলি আমি না ভাই কিছু না ভিতরে যেতে
চাই, ঠিক আছে যাবে বেশ আছে টাকা?
এমন প্রশ্ন জবাবে বলি কত টাকা লাগবে
দাঁরোয়ান কহে এককাপ চা একহাজার!


বিপাকে গেলাম পড়ে হবে না বুঝি দেখা
হোটেল সোনারগাঁও অর্থ অর্থ ব্যতিত!
মনটি খারাপ করে এলাম ফিরে মিরপুরে
বাসায় এলাম বটে; অস্তির মনমাঝে।


জিদ হল একদিন যাবো দেখতে অবশ্যই
পড়ালেখা পাশাপাশি গৃহ শিক্ষকতা!
পরিশ্রম আর জিদ মন অর্জন অর্থ সংগ্রহ
মাস যায় আর একটু একটু সঞ্চয়।


ঐ'মনটিতে নিজস্ব আয়ের জমানো টাকা
গণনায় দেখি এক হাজার পাঁচশত!
মনে সঞ্চিত শক্তি যাই না দেখি সোনারগাঁ
নামক হোটেলটিতে চা পান পূরণ।


একা গেলাম ছুটে কাউকে নয় সাথে নিয়ে
জীবন চলার পথ সুগমন করা চাই;
বিশাল বিশালতা মন-প্রাণ-আত্মার চাওয়া
অপূর্ব সুন্দর চেতনা স্বপ্ন-পূরণ তৃপ্তি।


খুব ভালো ফুরফুরে মেজাজ আজ আর কোন
দারোয়ানকে কোন প্রশ্ন নয় সোঁজা!
প্রবেশ হোটেল রিসিপশন ওয়েটার কামসুন
স্যার কি লাগবে সমাদর সুআচরণ।


বলি বেশ তো মেন্যু এগিয়ে দিয়ে বলেন স্যার
এই হল আপনার মেন্যু পছন্দ করেন।
মনে ভয় দারোয়ার কথা ঐ'সেই এক বৎসরপূর্ব
এক হাজার টাকা এক কাপ চা-দাম।


কতই না খরচ হতে পারে দামী রেস্তোরা বিলাস
এমন সংকোচ ভাবনা মন মেন্যু মূল্য!
দেখা শেষ আসল কথা দারোয়ান মজা করেছিল
ঐ'সময় আমি বোকা গেঁয়ো ছেলে তাই।


এক কাপ চা খেতে লাগে না এক হাজার টাকা
তখন দেখতে পেলাম চা-মূল্য ত্রিশ মাত্র।
একটি ছোট্ট মাম-পানি সাথে ভেজিটেবল রোল
ওয়েটার বয় বকশিস্ বিল একশত বিশ।


এমন করেই জীবনে আশা পূরণ করেছি নিজস্ব
মানুষের মতন মানুষ হবো এ'ধরণীতে।
সত্যই একদিন কোন টাকাই ছিল না পকেটেতে
জীবন ছিল শূন্য হাত খানা কর্ম ভরা।


মনোবল সর্বক্ষণ সেরা চেতনা প্রাণ চঞ্চলতা স্বপ্ন
মনোবল কখনো হারাইনি এ'ধরণিতে।
স্বভাব নষ্ট করিনি অধঃপতন দেখা না পাই জীবন
সেই চলা পথ স্বচ্ছতা গড়া সুন্দরতম।


একদিন ঐ'হোটেলটিতেই আবার যাওয়া কর্মময়
জীবন অপূর্ব এক ডিনারভোজন শালা!
বিদেশী কোম্পানী জার্মানীদের সাথে মিটিং হয়
পদ-পদবী মানব সম্পদ ব্যবস্থাপক।


উনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার ও কথা হয় হোটেলটির
পূর্ব লেক কর্ণার গোসিপিং গোলটেবিল।
বেশ ভারী সুন্দর অপূর্ব আলো ঝিলমিল মুগ্ধকর
শোভা ছড়ানো আর ডিনারভোজ রম্য।


চলতে থাকলো কথা অফিসিয়াল সমস্ত কাজ-কর্ম
অসাধারণ সব সুসম্পর্ক চেতনা বিদ্যতা।
বেতন ভাতা নিয়ে কথাসহ চাকুরী চুক্তি নামা সহি
খুব ভারী হ্যান্ড-সাম বেতন একলক্ষ ষাট।


জীবনের মোর ঘুরে দাঁড়ালো আপন করে নিজকে
চিনতে শেখা মানে মানুষ যদি নিজেকে
গড়তে জানে; তবেই সেই সকল মানুষেরাই উন্নত
জীবন সুখ সমৃদ্ধি পেয়ে থাকে এ'ধরায়।


কষ্টের অপর নাম সুখ আর যদি হয় স্বভাব সুন্দর
সেই জীবন মন চরিত্র এক অপূর্ব শোভা।
হাজার ফুলের মাঝেই একটিই গোলাপ পেয়ে রয়
জাগ্রত জাতি আশা পূরণ হাজার টাকা চা!
××××××××××××××××××××××××××
বাণী: মন কোন কিছু চাইতেই পারে। তাই বলে ব্যাকূল হওয়ার কোনই দরকার নেই। দরকার সামর্থানুযায়ী যথার্থতায় কাজ করা। আর সেই মনস্থিরতার কোনই বিকল্প নেই। ধৈর্য্য ধারণে অর্জন মন; কঠোর পরিশ্রম বিনিময় একদিন সত্যই বৈধ যেন কোন সুন্দর আশা অবশ্যই পূরণ সম্ভব। যা পরিশ্রমী ব্যক্তি নিজেও জানতে পারাটা কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়ে। আর বিধাতা সেই রকম করেই দান করেন, যা অকল্পনীয়।