স্কুল থেকে মামাবাড়ি ছিলো না খুব  দূরে
তাই তো সেথা বারেবারে যেতাম ঘুরে ফিরে।
আশুতোষ আর মন্টু ছিলো আপন সহোদর
ভালো ছিলো দু'ভাই তারা উভয় বড়ো ধর।


অঙ্কে ছিলো ভারী পাকা বলা মাত্রই শেষ
টিচার বলতো দু'ভাই মিলে কাম করেছিস বেশ।
লেখাপড়ায় এতো ভালো ছাত্র ছিলো কম
বলার সাথে শেষ হতো সব পড়তো না যে দম।


এমন ছাত্র পেয়ে টিচার খুশি ছিলো অনেক
গরীব হওয়ায় মাঝে মাঝে কষ্টে থাকতো ক্ষণেক।
মামাবাড়ি যাবার জন্য আশু মন্টুর সাথে
রওয়ানা দিলাম স্কুল শেষে পথিক হবো তাতে।


আশু মন্টুর বাড়ি রেখে আমার মামার বাড়ি
থাকতো তাদের বাড়ির সামনে পানির ঘড়ার হাড়ি।
বাপ মা তাদের শিক্ষা দিলো বাইরে থেকে এসে
ঢুকবে না কেউ ঘরে আহা পা না ধুয়ে শেষে।


সেদিন আমি দেখলাম চেয়ে তাদের পেছন থেকে
দু'ভাই মিলে ধুচ্ছিল পা যত্নে থেকে থেকে।
সেদিন থেকে শিখলাম আমি বাইরে থেকে এসে
হাত পা ধুয়ে ঢুকবে ঘরে ঢুকবে অবশেষে।


লেখাপড়া হয়নি যে আর ফাইভে গেলো থেমে
কালবোশেখী আসলো নেমে আসলো থেমে থেমে।
আশতোষ আর নাইরে দেশে কোলকাতা তে থাকে
অল্প বিদ্যা লেখাপড়া ঘুরছে বাঁকে বাঁকে।


কোনো মতে দিন চলে যায় বৌদি করে ঝগড়া
রোজগারেতে পায় না যে কুল বৌদি যে দেয় বাগড়া।
এমন মেধার ছেলেরে ভাই তার কপালে আজ
কষ্ট দুঃখের জোয়ার এসে ভাঙছে সকল লাজ।


মন্টু এখন কালিয়াতে মস্ত বড়ো দরজী
দেখা হলে আদর করে সন্দেশ করে আরজি।
বন্ধু আমার দরজী হলেও মনটা অনেক বড়ো
আমায় দেখে মাঝেই মাঝেই কেনো জড়োসড়ো।


কালিয়া গেলে তার দোকানে একবার যাওয়া চাই
নইলে আমি মুখপানে তার কেমনে বা তাকাই।
কষ্টে সৃষ্টে দিন চলে যায় হাসি ভরা মুখ
গেলে যে তার দুঃখ্ চলে যায় কষ্টে ভাঙ্গা বুক।


বাচ্চাকাচ্চা স্ত্রী নিয়ে মন্টু দরজীর ঘর
কাটে আহা হাসি মুখে নাহি কেহ পর।
পেলে আমায় বলে বন্ধু আবার তুমি এসো
ভাবীর জন্য মিষ্টি সন্দেশ নিও ভালোবেসো।


আমার দেখা সেরা ছাত্র চোখা বললে কম
আজ যে তারা সব হারিয়ে যায় যে বেরোয় দম।
কেনো এমন হয় বিধাতা একটু খুলে বলো
না হয় তুমি যোগ্য কে আজ যোগ্য ব'লে ই চলো।


তোমার হিসেব মানবাঙ্কে মিলবে না যে কভু
এমন অঙ্ক তবে কেনো করতে হবে প্রভু।
মন্টুরে তুই যেথায় থাকিস ভালো থাকিস ভাই
মনে বড়ো কষ্ট আমার বলার জায়গা নাই।


প্রকাশস্থানঃ
বাংলো
জেলা ও দায়রা জজ
সুনামগঞ্জ ।


প্রকাশকাল-
সময়ঃ ০০-৪২মিনিট
তারিখঃ
বাংলা=০১ ফাল্গুন ১৪২৭
ইংরেজী=১৪-০২-২১