হঠাৎ একদিন মায়ের পেট থেকে বের হয়ে
কেঁদেছিলাম বারবার
চিৎকার করে কেঁদেছিলাম আকাশ জুড়ে
কাঁদলেও জ্বেলেছিলাম মায়ের কোলে সূর্যের আলো
দেখেছিলাম হাসি আর আনন্দের ঝর্ণা সবার চোখে মুখে


দীর্ঘকাল পেটে ধারণ করার অনাবিল আনন্দে
ভেসে গেলেন আমার মা
বুঝলেন আশপাশের সবকিছু বুঝলেন চারিধার
সুখের সমাহার
আমি শুধু কেঁদেছিলাম আ আ আ শব্দ করে 
শুধুই বারবার
তারপর কেটে গেলো হাজার শতাব্দী ধরে পথচলা
আমার এ পৃথিবীর পরে
কেটে গেলো কতোকাল কতোদিন কতো  বছর
এ পৃথিবী তে আমার
রাখিনি খোঁজ তার কিছু
চলেছি নিজের মতো করে আপন গতিতে
সময়ের পরিক্রমায় দেশের দয়ায় আর ঋণে
আজ আমি এখানে
দেশ সমাজ মানুষ দিয়েছে আমায় আজ
সবকিছু উজাড় করে


আজ আমি যেখানে
সেতো শুধু এদেশের মানুষের ভালোবাসা আর
উদারতার জন্য
যেখানে দাঁড়িয়ে নয়ন মেলে আজ আমি  দেখতে পাই
আকাশে শতো সহস্র বিমানের ওড়াউড়ি
দেশ বিদেশের মাটিতে কতো শতো মানুষের
আনাগোনা
দেখতে পাই আকাশে ঝাঁকবেঁধে দলবেঁধে হাজারো
পাখির উড়ে যাওয়া
দেখতে পাই রমনীর এটো বাসন থালাবাটি ধোয়া
সেতো শুধু
এদেশের মাটি আর নদীর জলের জন্য


কিন্তু আমি ঠিক কতোটুকুই বা করতে পারি
তারপর একটুও পারলাম না
এদেশের গরীব দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলাম
না বুক উঁচিয়ে
এ কষ্ট আমি সহিবো কেমন করে?
প্রিয় দেশ তুমি দিয়েছে আমায় অনেক কিছু
ঋণী তাই আমি আজ স্বদেশের কাছে
দিতে পারি নাই যদিও তোমায় কিছুই
ঋণের বোঝায় জর্জরিত তাই আমি
প্রিয় জন্মভূমি তোমার কাছে
বইতে পারছি না এ দায় এ বোঝা আর আমি
কোলে তুলে নাও তাই দেশ আমায় অসীম ক্ষমায়


কি দিলাম দেশকে আমি!
এ প্রশ্ন আজ আমায় বারেবারে কুড়ে কুড়ে খায়
আজ আমার এ পৃথিবীর আলো দর্শনের দিন
মায়ের মুখে সকলের মুখে হাসি ফুটানোর দিন
আমার দেশ আমার মা আমার পৃথিবী
তোমাদের কিছুই দিতে পারিনি আমি


তবুও প্রার্থনা এতোটুকু তোমাদের কাছে
শুধু ই আমার জন্য
জীবনের বাকী সময়টা যেনো সুস্থ সবল দেহে
চলতে পারি হাটতে পারি পৃথিবীর পথে
হোঁচট যেনো খেতে না হয় পথের কোণে ফেলে রাখা
কাঠের কোনো গুড়ির সাথে
লাঠি হাতে পথ চলতে না হয় যেনো আমাকে
আর এ পৃথিবীর পরে
এরি মাঝেই এমনি করেই যেনো নিভে যায়
নিভে যায় আমার জীবন প্রদীপ
চিরদিনের তরে!