কোথায় গেলো চিঠি আমার
কোথায় ডাকপিয়ন
কোথায় শব্দ কিড়িং কিড়িং
বেলের ঠনাঠন ।


খুশীর তরে চিঠির জন্য
থাকতাম চেয়ে পথ
চিঠি দিয়ে ডাকপিয়নে
থামিয়ে দিতো রথ।


বুকের ভেতর উথাল পাথাল
করতো সারাক্ষণ
আসবে কখন ডাকপিয়নে
দেবে চিঠি ক্ষণ।


সুখ সাগরে ভাসতাম আমি
পেয়ে চিঠির খাম
পড়লে ধরা মায়ের কাছে
দিতো যে ধুমধাম।


লুকিয়ে চিঠি বুকের ভেতর
চলে যেতাম ঘরে
ওয়াশরুমে ঢুকে চিঠি
পড়তাম চুপিসারে।


ডাকপিয়ন কে বলতাম আমি
খেয়াল রেখো ভাই
মাঝে মাঝে দেবো কিছু
যেটুক পারি তাই ।


টের যেনো মা পায় না কিছু
বাপেরটাও দেখো
মান সম্মান তোমার কাছে
কথাটা মোর রেখো।


লুকিয়ে চিঠি দিবা হাতে
দেখে সকল দিক
কেউ যদি তা দেখতে পারে
আমায় দেবে ধিক।


চিঠির কথা ভেবে ভেবে
রাত্রি হতো পার
বারেবারে পড়তাম চিঠি
পড়তাম শতো বার।


চিঠি ছিলো সুবাস ভরা
শুকতাম আমি কতো
হিংসা করে শুকতারা টা
বকতো আমায় শতো।


গোপনে ভাবি ধরার জন্য
চেষ্টা করতো কতো
পারতো না সে ধরতে আমায়
ভেঙে পড়তো শতো।


মন বাগানের ফুলে কতো
ভরতাম আমি ডালা
দূরে বসে বন্ধু শেষে
পরতো সুখের মালা।


ডাকপিয়নের চিঠি পেয়ে
হতাম বেজায় খুশি
আজকে শুধু চেয়ে দেখি
তিল ছাড়া সব ভুসি।


চিঠি ছিলো মৌমাছিদের
মধুর রসে ভরা
ইচ্ছেমতো খেতাম আমি
হতাম আকুল পরা।
  
এখন চলে মোবাইল আর
ইন্টারনেটে প্রেম
রিয়াল লাভ আর নাইরে কিছু
আছে শুধু শেম।


সারা রাত্রি জেগে জেগে
মোবাইলে হয় কথা
একটু যদি হয়গো বিরোধ
সাতদিনে নেই দেখা।


সময়ে কয় মিষ্টি কথা
সময়ে মধুর বাণী
সময়ে তার দুঃখে ভরা
মুখ যে মলিনখানি।


রাত বারোটায় প্রেমসাগরে
ডুবছে বসে হায়
পানের থেকে চুন খসে তার
রাতেই ব্রেক হয়।


এমনি করে চলছে এখন
যুগের সেরা প্রেম
প্রেমতো নয় এগুলো আজ
প্রেমের নামে শেম।


আগে ছিলো মিষ্টি প্রেম আর
মিষ্টি ভালো বাসা
এখন দেখি তিক্ততা আর
কমার্শিয়াল ভাষা।


প্রেম হয়েছে নেশা এখন
নেই যে প্রেমে বাঁশী
সকালবেলা কিছু হলে
বিকেলে কয় আসি।