এ বসুধা রঙ্গমঞ্চে শুধুই স্বার্থের খেলা আর খেলা
স্বার্থের প্রেষণায় প্রেষিত সবাই এ পৃথিবীতে আজ
স্বার্থ নিয়ে ই মেতে আছে সবাই এ রঙ্গশালায়
স্বার্থের পাগল সবাই এ ধরণী তলে
স্বার্থহীন কেউ কি  আছে? আদৌ আছে কি কেউ
স্বার্থ ছাড়া আছে কি কেউ এ পৃথিবীর পরে?


আকাশের কাছে গিয়েছিলাম, শুধালেম তারে
আকাশ বললো না
নেই কেউ,নেই কোনো নিঃস্বার্থ ব্যক্তি,এ ধরায়
সাগর কে শুধালেম সুরে,সে ও মুখ ভার করে বললো না
ময়ুরের কাছে শুধালেম গিয়ে, পেখমে আদর করে
পেখম মেলে হাই তুলে সে একই সুরে উত্তর দিলো
সে ও বললো না
বন্ধু-বান্ধব,আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশী একাত্ত্ব হয়ে,
হতাশার সুরে বললো না, বললো স্বার্থপর সকলেই
স্বার্থ ছাড়া কেউ না


যেমন কোনো বাহন যাত্রীকে বহন করে নিয়ে যায়
সে-ও তো,বিনিময়ে কিছু পাবার জন্যে
স্বামী তার প্রিয়তমা স্ত্রী কে,আর স্ত্রী তার প্রানপ্রিয় স্বামী কে
প্রেমিক-প্রেমিকা কে, আর প্রেমিকা তার প্রেমিক কে যে
হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার সাগরে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে
সাতার কাটে,সে ও তো একই, সেই বিনিময়েরই খেলা
এযে তাদের স্বার্থেরই লীলা


পশু-পক্ষী,জীব-জন্তু,মানব-মানবি সকলেই
হরেক রকম খেলায় মত্ত হলো আজ
সবইতো বিনিয়োগ,বিনিময়ের সূত্রেই গাথা
বিনিময়ই ভালোলাগা,ভালোবাসা,পছন্দ আর অপছন্দের
সব স্তম্ভ


হরদমই চলছে আমাদের স্বার্থের খেলা, এ পৃথিবীর পরে
পারস্পারিক স্বার্থ নিয়েই খেলছে সবাই, খেলে যাচ্ছে
নির্বিকার একই ধাচে,একই তালে,একই লয়ে
যে খেলায় নেই কোনো আম্পায়ার,নেই সেখানে
কোনো রেফারী
আপনাতে আপনি ই তারা আজ ফেরারী


তারপর ও যে খেলা এগিয়ে যাচ্ছে শৃঙ্খলা
ও নিয়ম মেনেই,সে-ও তো, এই স্বার্থেরই খেলা
সেখানে ও আছে বিনিময়,আছে বিনিয়োগ
আর এ বিনিময়ই তো সে সব প্রাপ্তির স্বার্থ


এই যে প্রকৃতির অপার মহিমায় গড়ে ওঠা
লক্ষ লক্ষ বিশাল জমিন পড়ে আছে মানবের
তরে
হাজার রকম সোনার ফসল ফলিয়ে ভ'রে দেয়
আমাদের গোলা ঘর
সে ও কি বিনিময় /স্বার্থ ছাড়া করে?


তাকেও তো কৃষক ভাইকে অনেক যত্ন-আত্তি করতে হয়
নানা রকম শৃঙ্গারের পরই তো সে ফসল সঙ্গমে ব্রতী হয়,
লিপ্ত হয়
এটা ও কি স্বার্থ নয়? এটাও কি নয় কোনো
বিনিয়োগ? এটাও কি স্বার্থের বাইরে?


বাড়ীর পোষ্য হিংস্র প্রানিটি যে আগন্তুকের
ওপর জীবনবাজী রেখে ঝাপিয়ে পড়ে,তার মনিবের জন্য
সেটা ও কি স্বার্থের জন্যে নয়? সেতো শুধু
দুবেলা অন্ন সংস্থান হয় বলেই কৃতজ্ঞতার
বলি হতে বাধ্য হতে হয় অকাতরে তাকে


আকাশ,সাগর,ময়ুর,পশু-পক্ষী সকলেই যখন বললো,
এ পৃথিবীর সবাই স্বার্থপর,স্বার্থের জন্য
এ ধরিত্রীর কেউ স্বার্থ ছাড়া করেনা কিছু-ই
কারোর জন্য


বিষন্নবদনে তখন চাঁদকে শুধালেম গিয়ে হে চাঁদ
তুমি কি বলো? সে বললো, না
নিরাশ হয়ো না তুমি
স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসে যে,কাজ করে যে,আমরা
সকলেই তাকে চিনি।


হেসে হেসে বললো শেষে চাঁদ,নিখাদ হৃদয়ে ভালোবাসে
যে,সে তোমাদেরই মা,
সে যে আমাদেরই মা,আর কেউ না


দুঃখে-কষ্টে,বিপদে-আপদে সারাজীবন বিনাস্বার্থে যে
আমাদের সঙ্গে থাকে, সে যে আমাদেরই মা
প্রতারণা,স্বার্থ,বিনিয়োগ,বিনিময় কাকে বলে
জানে না যে, জানে না আমাদের মা
সে মাকে তাই আমরা কখনো ভুলবো না
ভুলতে যে পারি না
নিঃস্বার্থ মার ভালোবাসা,যার নেই, নেই যার
যার কোনো তুলনা!