শীত ও বসন্তের আগে হেমন্তের আগমন ঘটে এই বাংলায়
হেমন্তের আবির্ভাবে আসে মন ভুলানো পরিবর্তন
চলে মৃদুমন্দ মলয়সমীরণের হৃদয়হরন খেলা
গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ আর বর্ষার অবিরাম বর্ষণাঘাত শেষে
শরৎ আসে হেমন্তের অগ্রদূত হয়ে
বাংলার মাঠে-ঘাটে চলে তখন হেড়েগলার গান
শরতের নির্মেঘ আকাশ আর কাশবনে চলে যার অবিরাম
খেলা


ধানের খেতে ও চ'লে তখন রৌদ্রছায়ার খেলা
গাঢ় সবুজের সমারোহ শিশির ভেজা পথ মাঠ-ঘাট
হেমন্ত আসে এই বাংলায়
বাংলার  মাঠ-ঘাট পথে-প্রান্তরে খাল-বিল নদীতে ঘাসফুল
খেজুরগাছ কুয়াশার চাদরে আদরমাখা অবয়বে


কৃষানীর ঘরে ওঠে পাকা ধান আর সবজি-সম্ভারে ভরে যায়
প্রান্তর
প্রকৃতিকে মনের মতো সাজিয়ে নেয় এ হেমন্ত
"ধন-ধান্যে পুষ্পেভরা আমাদের এই বসুন্ধরা"
দ্বিজেন্দ্রলারের গানের ছন্দে তখন ছড়িয়ে পড়ে বাংলার রূপ
পেঁজা পেঁজা মেঘের তুলা ভাসতে থাকে আকাশময় আর
হাতছানি দেয় শীতের কুয়াশাকে


কবি জীবনানন্দের লক্ষীপেচা সোনালি ডানার চিল আর
ভোরের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা ধানের শিষ কাটা
ইদুরেরা হেমন্তে জানান দেয়
'একি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনুপল্লীজননী'
কবি নজরুলের 'প্রেমময় নয়নে বাংলার যে অতুলনীয় রূপ '
কবি গুরুর কন্ঠে ও তাই  ধ্বনিত হয়েছে
এই হেমন্তেই "বাংলার বধু বুকভরা মধু....মা বলিতে প্রাণ
করে আনচান'


হেমন্ত চরম মিষ্টতা নিয়ে হাজির হয়, গ্রীষ্মের রুঢ়তা
প্লাবনের ভয়, শীতের তীব্রতা, কিছুই থাকেনা তখন
আর এ মায়াবি প্রহরে কবি ফররুখ তাই ডাহুকের ডাকে
মেতে ওঠেন
আর গেয়ে ওঠেন
'রাত পোহাবার কত দেরী পাঞ্জেরী' পৃথিবীর গান আকাশে
পৌছানোর
এটাই তো শ্রেষ্ঠ সময় ।