আমরা যারা বিদেশ থাকি মন পড়ে রয় দেশে
দেশের সকল স্মৃতি গুলো ভিড় করে দিনশেষে।
কি করবো আজ পাইনা ভেবে কষ্ট ভারী মনে
হৃদয় কাঁদে মন কাঁদে কাঁদে ক্ষণে ক্ষণে।


যখন ভাবী দেশের কথা মন ভারী হয় খুব
দুঃখ ভরা মনের মাঝে দুঃখেই রহি চুপ।
রাস্তার পাশে চায়ের দোকান লোকের কোলাহল
ভাবলে আসে ডাগর চোখে সাগর সম জল।


আঙ্গিনাতে ডালিম গাছে ধরতো ডালিম ফল
নাচতো সেথায় মৌমাছিরা নামতো তাদের ঢল।
ধানের ক্ষেতের পথটি ধরে ছিলো আনাগোনা
বন্ধুর বাড়ি যেতাম আবার সাথে ফড়িং সোনা।


দাড়িয়ে দূরে তালগাছটি ডাকতো ইশারায়
বলতো আমায় যাওনা ঘুরে আমার আঙ্গিনায়।
বেদেনীরা আসতো বাড়ি দেখতাম সাঁপের খেলা
রক্ত চুষে বিষ নামাতো জমতো লোকের মেলা।


সাপুত সুপুত দুধ দোয়াতো ভোরের গোয়ালা
গরম করে দুধ দিতো মা ভরে দুধের পেয়ালা।
মাছের ঝাকা মাথায় করে আসতো জেলে বাড়ি
হরেক রকম মাছ কিনে মা করতো রান্না বাড়ী।


খেজুর রসের ভেজা পিঠা খেতাম ভোরের বেলা
তুলতুলে আর নরম পিঠায় ভিজতো শুকনো গলা।
খেজুর গুড়ের পাটালী আর মুড়ি রোদে বসে
আয়েশ করে খেতাম সবাই খেতাম গল্প রসে।


পুকুর ঘাটে বিকেল বেলা বান্ধবীদের নিয়ে
গল্প করতাম ঢলে পড়তাম গায়ের ওপর গিয়ে।
চাড়া দিয়ে কিৎকিৎ খেলা আজও ভাসে মনে
কেমন করে যাবো ফিরে সুখের সে সব দিনে।


আজকে আমি অষ্ট্রেলিয়ায় আছি আমার বাড়ি
ইচ্ছে করে যাই ছুটে যাই নিজের দেশের বাড়ি।
শেকড় আমার ছিড়ে গেছে লাগবে না আর জোড়া
দেশ ছেড়ে আজ পরবাসে লাগামহীন এক ঘোড়া।


ফেলে আসা দিনগুলো সব কাঁদায় ক্ষণে ক্ষণে
ঘুমগুলি মোর নেয় সে কেড়ে নিশিত রাতের সনে।
প্রিয় আমার মাতৃভূমি সদাই ভালো থেকো
তোমার বুকে ঠেকাই মাথা আমায় ভালো রেখো।


হয়তো আমি যাবো না আর তোমার কাছে ফিরে
থাকবে তুমি দিবানিশি আমার হৃদয় ঘিরে।
প্রিয় আমার জন্মভূমি তুমিই আমার সব
দূরে বসেও শুনবো আমি পাখীর কলরব।