লাইব্রেরী চত্বরের ঘাসগুলো এখনো বারবার কেঁদে ফেরে
জানতে চায় তারা আমরা কোথায় আছি?
ঘাসগুলোর মা বাবা তাদের সান্তনা দেয় কিন্তু প্রবোধ মানে
না
সেখানে শালিক আসে,কবুতর আসে আহারের জন্য
ঘুরে ঘুরে তারা খাবার খায় আর ঘাসগুলো তাদের ডাকে
ঘাসগুলো তোমার আমার কথা তাদেরকে জিজ্ঞেস করে
জানতে চায় তোমার আমার ঠিকানা
আমরা কেমন আছি,কোথায় আছি সবই জানতে চায়
কি প্রিয় ছিলো ঘাসযুক্ত প্রাঙ্গনটি তোমার,কি প্রানবন্ত প
রিবেশ
দলে দলে ছাত্রীদের হেটে চলা আর অকারণে হেসে হেসে
একে অপরের গায়ের ওপর ঢ'লে পড়া


হালকা পাতলা ছিপছিপে গড়ন,দীর্ঘকায় দেহ,মিষ্টি মায়াবি
মুখ,পাতলা ঠোঁট,দুধগুড় মিশ্রিত গায়ের রং,পাখীর বাসার
মতো
কাজল কালো বড় বড় চোখ, গায়ের সুমিষ্ট ঘ্রাণ
এসবে মুগ্ধ হয়ে আমি নিষ্পলক তাকিয়ে থাকতাম তোমার
দিকে,শুধু তোমার দিকে


সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বসে বসে ঘাসছেড়া,একচেটিয়া
গল্প করা স্বপ্ন বোনা
সারাজীবনেও না ফুরানো গল্প করা
ঘুঘুর চোখে তাকিয়ে থাকতে তুমি আমার দিকে  
ছোটো ছোটো কানের দুল হালকা বাতাসে দুলতো আর
দুলতো
আজো পাগল করে তোলে সে জীবন আমাকে


সে ছায়াঘেরা ঘাসযুক্ত বন আজো হাতছানি দিয়ে ডাকে
ছাত্রছাত্রীদের অবিরাম ছুটে চলা,পাখীর ডাক
দু চারটে বাস গাড়ীর হর্ণ বাজিয়ে ছুটে চলা
কিছুই পারতো না আমাদের চোখ থেকে চোখ সরাতে

বিমুগ্ধ সে জীবন টা আবার ফিরে পেতে চাই
যেতে চাই সীমাহীন ঠিকানায় শুধু তোমাকে নিয়ে
শুধু তোমাকে নিয়ে
উড়ে যাওয়া একঝাক বালিহাসের মতো চলতো আমাদের
না ফুরানো গল্প, কোনোদিনও শেষ না হওয়া গল্প
না ফুরানো কথা
এরই মধ্যে হঠাৎ করে তুমি বলে উঠতে এ রিক্সা যাবে
ধানমন্ডি
গভীর বেদনায় তখন নিস্তব্ধ হয়ে যেতাম আমি
হাহাকার আর শূন্যতার রেখা টেনে দিয়ে তুমি ছুটে চলতে
আপন ঠিকানায়


হেলতে দুলতে দুলতে রিক্সাওয়ালা ছুটে যেতো তোমাকে
নিয়ে
বেঁজে উঠতো রিক্সার বেল,কেঁপে উঠতো আমার মন
কেঁপে উঠতো লাইব্রেরী ভবন,রোকেয়া হলের সামনের
রাস্তা
কেঁপে উঠতো হাকিম চত্বরের চায়ের কাপগুলি
থেমে যেতো একঝাক তরুণীর ছন্দে ছন্দে এগিয়ে চলা


আর আমি বুকভরা দুঃখভরা ব্যাথাতুর হৃদয় নিয়ে ফিরে
যেতাম হলে
আহত ডানা ঝাপটানো পাখীর মতো ছটফট করতে করতে
রাতকে করতাম ভোর
শুনতাম পাখীর কলকাকলী আর আযানের ধ্বনি
তোমার জন্য শুধু তোমার জন্য
আজ বিষাদ ছুঁয়েছে আমার মন,কিছুই লাগেনা ভালো
আমার কিছুই লাগেনা ভালো
জানিনা কোথায় আছো? কেমন আছো?
ভালো থেকো নীলা
সারাক্ষন সারাবেলা সারাদিন সারাজীবন!