আমি আজ ধর্মঘটের ডাক দিচ্ছি—
এটা কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা নয়,
এটা এক হৃদয়ের ক্ষোভ,
এক কবির শেষ আবেদন এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর কাছে।
এই ধর্মঘটে বন্ধ থাকবে—
শুধু কলকারখানা বা পরিবহন নয়,
বন্ধ থাকবে যুদ্ধের কনভয়, মিথ্যার প্রচারযন্ত্র,
বন্ধ থাকবে শিশুদের কান্নার দৃশ্য,
এমনকি বাতাসও থেমে যাবে, যদি আমার কথা না শোনা হয়।
আমার দাবি একটাই:
আমি কবিতা চাই।
আমি এমন কবিতা চাই—
যেখানে শহিদের রক্ত শুকায় না কাগজে,
যেখানে মায়ের কোলে যুদ্ধবিধ্বস্ত সন্তানের শান্তি ফিরে আসে,
যেখানে প্রেমিক জোছনায় প্রেমিকাকে খুঁজে পায়,
আর একজন কবি গুনগুন করে বলেন—
"এটাই বাঁচার গান।"
এই ধর্মঘটের আরেকটা শর্ত আছে—
আমি মানবতার পৃথিবী চাই।
একটা পৃথিবী যেখানে শিশুরা কাঁথা জড়িয়ে ঘুমায়
বোমা ঢুকে না তাদের স্বপ্নে।
যেখানে রোহিঙ্গা, সিরীয়, ফিলিস্তিনি নয়—
সবাই কেবল মানুষ,
এমন একটি মানচিত্র চাই,
যেখানে রক্তের রং দেখে পাসপোর্ট তৈরি হয় না।
আরও চাই,
পশুপাখির বাসযোগ্য এক বিস্ময়কর পৃথিবী।
যেখানে অরণ্যে গর্জে না দখলদার ট্রাক,
যেখানে নদী বয়ে চলে নিজের ছন্দে,
আর এক পশলা বৃষ্টির ভেতর
চড়ুই-টিয়া গায় মুক্তির গান।
আমি দাঁড়িয়ে বলি,
নদীর পাশে, গাছের ছায়ায়,
জলের কণ্ঠে উচ্চারণ করি—
আমি মানুষ হতে চাই।
এমন মানুষ,
যে হাতে শুধু শ্রম আছে, হৃদয়ে প্রেম,
যে শুধু ধর্মে নয়—ভালোবাসায়ও বিশ্বাসী,
যে রাষ্ট্রের সীমানা নয়—আকাশের নীচে একটুকরো ছায়ায়
সব জীবের অধিকার স্বীকার করে।
এই ধর্মঘট—
একটি কবির নয়,
একটি আত্মার আওয়াজ।
এটা চলবে
যতদিন না পত্রিকায় প্রেমের কবিতা ছাপা হয়
যতদিন না নেতারা চোখের জলে বুক ভেজান
যতদিন না মানুষ
মানুষ হতে শেখে।
“এই ধর্মঘট মানুষের জন্য, পশুপাখির জন্য,
জলের জন্য, বাতাসের জন্য—
সবচেয়ে বেশি, কবিতার জন্য।”