অন্ধকার ছায়া নামে ইতিহাসের বুকে,
শাসকের মুখোশে লুকায় মুখ—শকুন চোখে।
কালো পোশাকে আসে ন্যায়হীন রাত,
সিংহাসনে বসে যারা করে বিশ্বাসের ঘাত।
জীবনের নদী শুকায়, মাটির গন্ধ মরে,
নদীর কূলে দাঁড়িয়ে কেউ জাগায় ক্ষয়ে যাওয়া ধ্বনি।
বলে—"তোমরা যারা চুরি করো সময়ের মানচিত্র,
তোমাদেরও ফুরাবে দিন, ঝড় উঠবে অন্তরীক্ষ।"
আমি এক সময়-যোদ্ধা, ইতিহাসের পাশে দাঁড়াই,
প্রতিটা অসত্যের মুখে আগুনের ছায়া ছড়াই।
যেখানে থেমে গেছে জেগে ওঠার পদচিহ্ন,
সেখানে গড়ে তুলি দ্রোহের এক নতুন সিঁড়ি।
মহাকাল চেয়ে থাকে—সে জানে কে ছিল সত্য,
কে বিকিয়েছে স্বপ্ন, কে জাগিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ব্যথা।
নীরবতাও একদিন চিৎকার হয়ে ওঠে
যখন একটি নাম, একটি ধ্বনি মহাকালে লিপিবদ্ধ হয়।
তুমি যারা এখনও ঘুমাও, জানো না প্রহরের হিসাব,
তোমাদের ঘুম ভাঙবে বজ্রধ্বনির অভিসারে,
কারণ সত্যের শিকড় ছেঁড়ানো যায় না,
তা ফিরে আসে, বিদ্রোহ হয়ে, মহাকালের হাওয়া বেয়ে।
তবু আমি হাঁটি—ঝড়ের মুখে, রক্তাক্ত প্রান্তরে,
পেছনে পোড়া গ্রাম, সামনে অনিশ্চিত এক ভোরের ফটক।
আমার হাতে কোনো অস্ত্র নেই, শুধু কিছু পঙ্ক্তির আগুন,
আর হৃদয়ে গেঁথে রাখা মাতৃভূমির ভেজা রৌদ্রছায়া।
আমি জানি—এই পথ দীর্ঘ, এই রাত হয়তো শেষহীন,
তবুও একদিন সূর্য উঠবেই, কারাগারে আলো পড়বেই।
কারণ মহাকাল চুপ করে থাকে না, সে রক্ত চেনে, শব্দ শোনে—
সে জানে, কোন কবিতায় গর্জে ওঠে জাতির দ্রোহ।
একদিন তোমরা শুনবে—পাথরের বুক ফেটে উঠবে গান,
জালিমের প্রাসাদে দুলবে ধ্বংসের ঘণ্টাধ্বনি,
আর সেইদিন, সময় বলবে:
"এই তো সেই কণ্ঠ, যে নিঃশব্দে মহাকালকে জাগিয়ে তুলেছিল।"