কবিতা-- হস্তান্তরযোগ্য আবাস
"আমার চেয়ে অনেক ভালো কেউ আসুক
তোমার জীবনে, ক্ষমা করো,
পারলে পুরোপুরি ভুলে যেও আমাকে"
এই বলে তুমি যখন চলে গেলে --
ঐ মুহূর্ত থেকে পৃথিবীর সমস্ত মাটি
আমার পায়ের নিচ থেকে সরে গেছে ;
এক অসীম শূন্যতায় আমি ভেসে আছি।
তারপর থেকে আমি আমার হতে পারিনি।
কাছের হতে পারিনি, দূরের হতে পারিনি,
আপন কিংবা পর, কারোর কিছুই হতে পারিনি।
সুখী হতে পারিনি, দুঃখী হতে পারিনি।
তীব্র থেকে তীব্রতর কষ্টেও কাঁদতে পারিনি।
প্রচন্ড চেষ্টাতেও হাসতে পারিনি।
বহুবছর পর,
আজও আমার সময় সেখানটাতেই দাঁড়িয়ে।
বুকের ভেতর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে শেষ হয়ে গেছে স্রোত,
চোখের আকাশে বৃষ্টি নেই।
কর্নিয়ায় স্থির হয়ে আছে -
তুমি চলে যাচ্ছো নীরবে,
একটিবারের জন্য পিছন ফিরে দেখছ না।
এদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে,
ধমনি থেকে হৃৎপিণ্ডে।
ফিনিক্সের ছাই হয়ে পুড়ছি ;
উড়ছি অপ্রাপ্তির দগ্ধ সমীরে।
অ-সৃষ্ট কোন শব্দ
প্রজাপতির মতো উড়ে এসে বলছে না--
এসব কিছু সত্য নয় ;
সকল মিথ্যারা আজ কল্পনার দখলে ।
তোমার যাবার বহুবছর হলো।
ফেরার সংকীর্ণ আশাও নেই ;
তবুও এখানটায় অপেক্ষা....
প্রতিটা দিন
আমার আয়ুর চেয়ে বেশি আয়ু নিয়ে
বেঁচে থাকা তোমার স্মৃতি
তোড়ের জলের মত আত্মনিবেদন করে।
বক্ষঃস্থলে আর্দ্র মাটি জুড়ে নির্মম অবহেলার সৌরভ ।
পুরনো বিচ্ছেদ নতুন করে কাছে আসে --
মহাশূন্যের তাঁবুর নিচে, ঘাসের শরীরে।
অতঃপর
অক্ষিকোটরের শোকার্ত জল সমেত
নিঃসঙ্গতা অনুধাবন করতে করতে
জেনে যাই --
"ভালোবাসা তুমি" শাম্ভালার হস্তান্তরযোগ্য আবাস।
যুগের পর যুগ ধরে বদলে গেছ হাতে হাতে।
S.I ZITU
#
শাম্ভালা -- বৌদ্ধদের পৌরাণিক সম্রাজ্য