আসিনি হে দুর্গাদেবী, তোমায় পূজিতে তবে!
পূজিব আমি সেই সে দেবী, যে তোমারে পূজিবে।
যে দেবী লুটাইবে মস্তক, কাঁদিবে অঝোর— জড়ে;
তাহাকেই পূজিবো, দেহ-প্রাণ উৎসর্গ তাহার তরে।


লুটাইয়া দেবো মোর মুণ্ডখানি রূপের সম্মুখে—
সুখের লাগি ভাসাইবো মন, কাঁদিবো তাহার দুখে।
ফুল-মাল্য করিবো দান— তাহার চরণতলে,
মনুষ্যদেবীকেই সেবিবো আমি— হস্ত কৃতাঞ্জলে।


জড়ের প্রেমে মজিনি আমি, মজেছি আমি জীবে,
রেগো না ওগো দুর্গাদেবী, নালিশ দিও না শিবে।
যে দেবী হাসাইবে মোরে, কাঁদিবে মোর পীড়ায়,
সে দেবীর দেবতা হবো, তাহার প্রেম প্রতি শিরায়।


যে দেবী নাচিবে-গাহিবে, সাকি হইবে শূরা-আসরে,
রূপ-মাধুরী ছড়াইবে, আশা মিটাইবে রতি-বাসরে,
সে দেবীর করি আরাধনা, তাহাকেই আমি পূজি!
তোমার দেবালয়ে তাই— বারবার ঘুরি-ফিরি-খুঁজি।


জড় আমায় দেয় না আদর, টানে না আমায় বুকে
তনু ছোঁয়ায় ভরায় না মন, দেহ-জ্বালা যায় না চুকে!
সপ্রাণ সোহাগ বিলায়, স্নিগ্ধ-কোমল বক্ষে নেয় টানি,
মৃগ-সুবাসে প্রেমিক বানায়, তৃষ্ণাতুর মনের ঘোচায় গ্লানি।


প্রার্থনা তব এই— জ্যান্তদেবীর পানে,
করুণা করো, দেবতা গড়ো— তোমার আসন-ধ্যানে।